০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ধুমধামে পালিত

স্টাফ রিপোর্টার
স্টাফ রিপোর্টার

জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ধুমধামে পালিত

বহুল প্রচলিত জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে এক আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে।

শনিবার বিকাল তিনটায় রাজধানীর কচিকাঁচা ভবনের মিলনায়তনে এই আনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ আবুল হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২ বছরের পথচলার সাফল্য, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে সংক্ষিপ্ত এক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে পত্রিকার অগ্রযাত্রা, গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশের অবহেলিত মানুষের কথা তুলে ধরার যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা– সেই সবকিছুর জন্য পত্রিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক প্রেস ক্লাব ও ঢাকা প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক আওরঙ্গজেব কামাল।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সময়ে সাংবাদিকদের নানামুখী সংকট, পেশাগত অসুরক্ষা ও আইনি হয়রানির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি এ সময় সরকারের কাছে সাংবাদিক সমাজের পক্ষে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সাংবাদিকদের উপর মামলা-হামলা বন্ধে বিশেষ আইনগত সুরক্ষা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সাংবাদিকদের সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা প্রদান করতে হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। প্রত্যেক সাংবাদিকের জন্য জীবন ও পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এককালীন পেনশনের ব্যবস্থা করা। গণমাধ্যমবান্ধব নীতি প্রণয়ন এবং বিদ্যমান কালাকানুন সংশোধন, সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে প্রশাসনের সহযোগিতা বৃদ্ধি ইত্যাদি।

আওরঙ্গজেব কামাল বলেন, “গণতন্ত্র রক্ষার প্রধান হাতিয়ার হলো স্বাধীন গণমাধ্যম। আর স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা। দেশে প্রতিনিয়ত সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে—এ অবস্থা চলতে পারে না। আমরা প্রতিটি সাংবাদিক নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার চাই।

তিনি এ সময় বলেন এশিয়ান টিভির সাংবাদিক শিহাব কে মিরপুর থানা পুলিশ অহেতুক আটক করে ছাত্রলীগের নেতা বানিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেছে। আমি এ ঘটনা তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই এবং তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

আন্তর্জাতিক প্রেসক্লাবের সভাপতি আরও বলেন, কোনো রাষ্ট্র উন্নত গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখতে পারে না যদি সেখানে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা হয়। তাই দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বিকাশে সাংবাদিকদের মুক্ত চিন্তা, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে পাকিস্তান থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন আন্তর্জাতিক প্রেস ক্লাবের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পাকিস্তান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মির ইশতিয়াক আলী।

তিনি তাঁর বক্তব্যে দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২ বছরের সাফল্যময় পথচলার জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। মির ইশতিয়াক আলী বলেন,“মানবাধিকার ও সত্য সংবাদকে সামনে রেখে যে কোনও পত্রিকার যাত্রা শুরু করা অত্যন্ত সাহসী উদ্যোগ। মানবাধিকার প্রতিদিন নামের এই পত্রিকাটি শুধু বাংলাদেশের মানুষের অধিকারই নয়, বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠুক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।তিনি আরও জানান, বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও হয়রানির বিরুদ্ধে তারা আন্তর্জাতিক পরিসরে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, “আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে এবং সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধ একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে কাজ করছি। সকলের সহযোগিতা পেলে আমরা সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় বিশ্ববাসীর কাছে এক নতুন মডেল উপস্থাপন করতে পারব। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক মাতৃ জগত পত্রিকার সম্পাদক খান সেলিম রহমান।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমের উপর নানা ধরনের চাপ ও অপপ্রচারের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে দেশে ব্যাপক হারে সাংবাদিকদের নামে অহেতুক ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ি থেকে সাংবাদিকদের ধরে নিয়ে গিয়ে ছাত্র-জনতা কিংবা রাজনৈতিক মামলায় আসামি দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি।

খান সেলিম রহমান আরও বলেন, “আমরা ঢাকা প্রেসক্লাবের সভাপতি আওরঙ্গজেব কামালের নেতৃত্বে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে সকল নির্যাতিত ও আটক সাংবাদিকদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের উপস্থিতি ও বক্তব্য অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দুর্নীতি প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক তাইজুল ইসলাম তালুকদার হিরু,বাংলাদেশ ভূমিহীন ও গৃহহীন হাউসিং লিমিটেড–এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজহার আলী, উক্ত প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পাদক মোঃ ইউনুস আলী,সমাজসেবক মোঃ সাইফুল ইসলাম, ঢাকা প্রেসক্লাবের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা হাজরাতুন্নেসা, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোঃ নাঈম,মোঃ রাসেল, মোঃ কুতুব উদ্দিন, মোঃ শিহাব উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রায় পাচ শতাধিক সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সুধীজন অনুষ্ঠানস্থল পূর্ণ করে তোলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালা যুক্ত ছিলেন ভারত থেকে আন্তর্জাতিক প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সমরেশ রায়, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শম্পা দাস, সৌদি আরব থেকে আন্তর্জাতিক প্রেস ক্লাবের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সোহাগ প্রমূখ।

বিশেষ অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার সাহসী অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা ও দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের প্রশংসা করেন।

তাঁরা বলেন, দেশের প্রান্তিক মানুষের দুর্দশা, বঞ্চিত মানুষের আর্তনাদ ও সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরতে এই ধরনের মানবাধিকারভিত্তিক পত্রিকার বড় প্রয়োজন রয়েছে।

আলোচনা পর্ব শেষে পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দেশ, জাতি, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ এবং সাংবাদিক সমাজের সার্বিক মঙ্গল ও নিরাপত্তা কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। পরে পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদক, অতিথিবৃন্দ ও উপস্থিত সাংবাদিকদের নিয়ে কেক কাটা হয়।সমাপনী বক্তব্যে দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ আবুল হাসান প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা এই পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, আছেন এবং ভবিষ্যতে থাকবেন—সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, সুশাসন ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের এই যাত্রা। আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি দায়িত্বশীল, বস্তুনিষ্ঠ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে আমরা পাঠকদের আস্থা ধরে রাখতে চাই।

শেষে তিনি পত্রিকার ১২তম বছরকে “দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম, মানবাধিকারের পক্ষে কণ্ঠ” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সামনে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা পত্রিকার উত্তরোত্তর সাফল্য, দীর্ঘায়ু এবং দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখার জন্য শুভকামনা জানান।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ১২:২১:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ধুমধামে পালিত

আপডেট: ১২:২১:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ধুমধামে পালিত

বহুল প্রচলিত জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীতে এক আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়েছে।

শনিবার বিকাল তিনটায় রাজধানীর কচিকাঁচা ভবনের মিলনায়তনে এই আনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ আবুল হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২ বছরের পথচলার সাফল্য, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে সংক্ষিপ্ত এক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে পত্রিকার অগ্রযাত্রা, গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দেশের অবহেলিত মানুষের কথা তুলে ধরার যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা– সেই সবকিছুর জন্য পত্রিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক প্রেস ক্লাব ও ঢাকা প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক আওরঙ্গজেব কামাল।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সময়ে সাংবাদিকদের নানামুখী সংকট, পেশাগত অসুরক্ষা ও আইনি হয়রানির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি এ সময় সরকারের কাছে সাংবাদিক সমাজের পক্ষে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সাংবাদিকদের উপর মামলা-হামলা বন্ধে বিশেষ আইনগত সুরক্ষা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সাংবাদিকদের সরকারের পক্ষ থেকে মাসিক ভাতা প্রদান করতে হবে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করার নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। প্রত্যেক সাংবাদিকের জন্য জীবন ও পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এককালীন পেনশনের ব্যবস্থা করা। গণমাধ্যমবান্ধব নীতি প্রণয়ন এবং বিদ্যমান কালাকানুন সংশোধন, সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে প্রশাসনের সহযোগিতা বৃদ্ধি ইত্যাদি।

আওরঙ্গজেব কামাল বলেন, “গণতন্ত্র রক্ষার প্রধান হাতিয়ার হলো স্বাধীন গণমাধ্যম। আর স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সাংবাদিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা। দেশে প্রতিনিয়ত সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে—এ অবস্থা চলতে পারে না। আমরা প্রতিটি সাংবাদিক নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার চাই।

তিনি এ সময় বলেন এশিয়ান টিভির সাংবাদিক শিহাব কে মিরপুর থানা পুলিশ অহেতুক আটক করে ছাত্রলীগের নেতা বানিয়ে কারাগারে প্রেরণ করেছে। আমি এ ঘটনা তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই এবং তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।

আন্তর্জাতিক প্রেসক্লাবের সভাপতি আরও বলেন, কোনো রাষ্ট্র উন্নত গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখতে পারে না যদি সেখানে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা হয়। তাই দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের বিকাশে সাংবাদিকদের মুক্ত চিন্তা, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে পাকিস্তান থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন আন্তর্জাতিক প্রেস ক্লাবের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও পাকিস্তান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মির ইশতিয়াক আলী।

তিনি তাঁর বক্তব্যে দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার ১২ বছরের সাফল্যময় পথচলার জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। মির ইশতিয়াক আলী বলেন,“মানবাধিকার ও সত্য সংবাদকে সামনে রেখে যে কোনও পত্রিকার যাত্রা শুরু করা অত্যন্ত সাহসী উদ্যোগ। মানবাধিকার প্রতিদিন নামের এই পত্রিকাটি শুধু বাংলাদেশের মানুষের অধিকারই নয়, বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠুক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।তিনি আরও জানান, বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড ও হয়রানির বিরুদ্ধে তারা আন্তর্জাতিক পরিসরে একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, “আমরা সাংবাদিকদের কল্যাণে এবং সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ঐক্যবদ্ধ একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে কাজ করছি। সকলের সহযোগিতা পেলে আমরা সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় বিশ্ববাসীর কাছে এক নতুন মডেল উপস্থাপন করতে পারব। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সেন্ট্রাল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক মাতৃ জগত পত্রিকার সম্পাদক খান সেলিম রহমান।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বর্তমান সময়ে গণমাধ্যমের উপর নানা ধরনের চাপ ও অপপ্রচারের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “বর্তমানে দেশে ব্যাপক হারে সাংবাদিকদের নামে অহেতুক ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই বাড়ি থেকে সাংবাদিকদের ধরে নিয়ে গিয়ে ছাত্র-জনতা কিংবা রাজনৈতিক মামলায় আসামি দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি।

খান সেলিম রহমান আরও বলেন, “আমরা ঢাকা প্রেসক্লাবের সভাপতি আওরঙ্গজেব কামালের নেতৃত্বে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে সকল নির্যাতিত ও আটক সাংবাদিকদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিদের উপস্থিতি ও বক্তব্য অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক দুর্নীতি প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক তাইজুল ইসলাম তালুকদার হিরু,বাংলাদেশ ভূমিহীন ও গৃহহীন হাউসিং লিমিটেড–এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজহার আলী, উক্ত প্রতিষ্ঠানের অর্থ সম্পাদক মোঃ ইউনুস আলী,সমাজসেবক মোঃ সাইফুল ইসলাম, ঢাকা প্রেসক্লাবের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা হাজরাতুন্নেসা, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান, মোঃ নাঈম,মোঃ রাসেল, মোঃ কুতুব উদ্দিন, মোঃ শিহাব উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রায় পাচ শতাধিক সাংবাদিক, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সুধীজন অনুষ্ঠানস্থল পূর্ণ করে তোলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালা যুক্ত ছিলেন ভারত থেকে আন্তর্জাতিক প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সমরেশ রায়, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শম্পা দাস, সৌদি আরব থেকে আন্তর্জাতিক প্রেস ক্লাবের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব সোহাগ প্রমূখ।

বিশেষ অতিথিরা তাঁদের বক্তব্যে দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার সাহসী অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা ও দুর্নীতিবিরোধী অবস্থানের প্রশংসা করেন।

তাঁরা বলেন, দেশের প্রান্তিক মানুষের দুর্দশা, বঞ্চিত মানুষের আর্তনাদ ও সমাজের অসঙ্গতি তুলে ধরতে এই ধরনের মানবাধিকারভিত্তিক পত্রিকার বড় প্রয়োজন রয়েছে।

আলোচনা পর্ব শেষে পত্রিকার ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দেশ, জাতি, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ এবং সাংবাদিক সমাজের সার্বিক মঙ্গল ও নিরাপত্তা কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। পরে পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদক, অতিথিবৃন্দ ও উপস্থিত সাংবাদিকদের নিয়ে কেক কাটা হয়।সমাপনী বক্তব্যে দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মোঃ আবুল হাসান প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা এই পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, আছেন এবং ভবিষ্যতে থাকবেন—সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “মানবাধিকার, ন্যায়বিচার, সুশাসন ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের এই যাত্রা। আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি দায়িত্বশীল, বস্তুনিষ্ঠ ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে আমরা পাঠকদের আস্থা ধরে রাখতে চাই।

শেষে তিনি পত্রিকার ১২তম বছরকে “দুর্নীতির বিরুদ্ধে কলম, মানবাধিকারের পক্ষে কণ্ঠ” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সামনে এগিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা পত্রিকার উত্তরোত্তর সাফল্য, দীর্ঘায়ু এবং দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় আরও শক্তিশালী ভূমিকা রাখার জন্য শুভকামনা জানান।