• সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরলো ২১ বাংলাদেশি  নোয়াখালীর কবিরহাটে শিশুকে যৌন নিপীড়ন, গ্রেপ্তার-১ সাধারণ মানুষের স্বার্থে ট্রাফিক ও জানজট মুক্ত করতে সাব ট্রাফিক স্টেশন উদ্বোধনে পুলিশ সুপার বাংলাদেশ ন্যাশনাল নিউজ ক্লাব ও বাংলাদেশ ভূমিহীন গৃহহীন হাউজিং লিঃ পরিবারের পক্ষ থেকে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত সেনবাগ উপজেলা প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হাতিয়াতে বিএনপি নেতা শামীমকে প্রত্যাখানের ঘোষণা, কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ চাটখিলে গুলি করে যুবককে হত্যা,যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত যুবদল নেতা গ্রেপ্তার মধুপুরে মাকে কুপিয়ে হত‍্যা ও স্ত্রীকে গুরুতর আহত করে পালিয়েছে ছেলে বেনাপোলে গাঁজাসহ এক মাদক ব্যবসায়ী আটক হোলি উৎসব উপলক্ষে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কড়া নির্দেশ প্রশাসনের

নোয়াখালীতে মাঝরাতে ব্যাবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ১

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ১১ জুন, ২০২৩

মোঃ রিয়াজুল সোহাগ, নোয়াখালী থেকেঃ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের টংগিরপাড় নামক এলাকার দুলাল চন্দ্র দাস(৫০), পিতা- মৃত হরলাল চন্দ্র দাস, সাং- টঙ্গীরপাড়, হরলাল দাসের বাড়ী, ৫নং ওয়ার্ড, ৬নং রাজগঞ্জ ইউপি, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালীকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা নৃশংসভাবে কুপিয়ে এবং গলা কেটে হত্যা করে একটি চেয়ারে রক্তাক্ত অবস্থায় দুলাল চন্দ্র দাসের মৃত দেহ রেখে পালিয়ে যায় পরবর্তীতে জানা যায় ভিকটিম ছয়ানী বাজারে তার ভাই প্রান চন্দ্র দাসের দোকানে ব্যবসায় সহযোগিতা করিত।

তার পাশাপাশি তাদের বাড়ীর পাশে ভূইয়াগো দীঘি বিগত ০২ বছর যাবৎ লিজ নিয়ে মাছ চাষবাদ করত এবং উক্ত পুকুরে মাছ পাহারা দিত। প্রতিদিনের ন্যায় ভিকটিম দুলাল চন্দ্র দাস গত ১০মে রাত অনুমান ১ টার সময় মাছ চাষের দীঘি পাহারা দেওয়ার জন্য তার ঘর হতে বের হয়।

রাত অনুমান ২ টার দিকে দীঘির পাড়ে গিয়ে তার কাকা ঘৃতলাল চন্দ্র দাস তার সাথে দেখা করে আসে এবং কথা বলে তার কাকা জাল নিয়ে অন্য জায়গায় মাছ ধরতে চলে যায়। অনুমান ৪ টার সময় ভিকটিমের আরেক কাকা পরেশ চন্দ্র দাস এবং ভাই রতন চন্দ্র দাস দীঘির পাড়ে গিয়ে জাল আনতে গেলে দুলাল চন্দ্র দাসকে একটি চেয়ারে বসা অবস্থায় মুখমন্ডলে ও গলায় এলোপাতাড়ী কোপানো, রক্তাক্ত এবং গলা কাটা মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে ভিকটিমের স্ত্রী ও অন্যান্যরা ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমকে শরীরে বিভিন্ন স্থানে কোপানো, গলাকাটা রক্তাক্ত চেয়ারে বসা মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। অজ্ঞাতনামা আসামী আসামীরা গত ১০মে রাত অনুমান ২ টা হতে ভোর ৪টার মধ্যে ভিকটিম দুলাল চন্দ্র দাসকে এলোপাতাড়ী কুপিয়ে ও গলায় পোছ দিয়ে হত্যা করে।

নোয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন।

উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সুপার, নোয়াখালী এর নির্দেশনা মোতাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বেগমগঞ্জ সার্কেল এর নেতৃত্বে অফিসার ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত), বেগমগঞ্জ থানা এবং বেগমগঞ্জ থানার এসআই কৃষ্ণ কুমার দাস, এসআই ফিরোজ আহম্মেদ, রাজগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শাহেদ এবং ফোর্সসহ সেখানে যায় এবং ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করে। ঘটনা বিস্তারিত তদন্তকালে জানা যায় যে, জনৈক আবদুর রব প্রকাশ আবুল(৪০), পিতা-মৃত মালেক, সাং-আলমপুর, ৬নং ওয়ার্ড, রাজগঞ্জ ইউপি, বর্তমানে দিলিলপুর সওদাগর বাড়ী, ৪নং ওয়ার্ড, রাজগঞ্জ ইউপি, থানা-বেগমগঞ্জ, জেলা-নোয়াখালী অনুমান ৪/৫ দিন পূর্বে তাদের এলাকার নিকটবর্তী একটি পুকুর থেকে রাতের বেলায় মাছ চুরি করে নিয়ে যায় এবং সে বিষয়টি নিহত দুলাল দেখে ফেলে তা উক্ত পুকুরের মালিকপক্ষকে জানায়। পুকুরের মালিকপক্ষ এই নিয়ে উক্ত আবদুর রব প্রকাশ আবুলকে বকা দেয়।

এই নিয়ে ভিকটিম ও তাদের মাঝে একটি বিরোধ হয়। পরবর্তীতে উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে আবুল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করার একপর্যায়ে আবুল হোসেন স্বীকার করে যে, ৪/৫ দিন আগে জনৈক রব মিয়ার পুকুরে সে এবং বাদশা মাছ ধরেছিল। পরবর্তীতে এই বিষয়টি দেখে নিহত দুলাল পুকুরের মালিক রব মিয়াকে জানায়। তখন রব মিয়া আবুল হোসেন ও বাদশাকে এই বিষয় নিয়ে গালমন্দ করে।

ঘটনার প্রতিশোধ নিতে তখন আবুল হোসেন বাদশার সাথে পরামর্শ করে। বাদশার ব্যাপারে জানা যায় বাদশা এলাকায় বখাটে এবং মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময় তার এলাকায় বিভিন্ন মানুষকে কোপানোর হুমকি এবং কোপানোর চেষ্টার কথা জানা যায়। তার মা স্বীকার করেন যে, বাদশা এর আগে তার মায়ের উপর রাগ করে তার মাকে এবং চাচাকে কোপাতে যায়। সে প্রায়ই দুলালের বাসার সামনে দিয়ে নিকটবর্তী শ্বশানে বিভিন্ন লোকজন নিয়ে মাদক সেবন করতো। নিহত দুলাল বাদশাকে তার বাড়ীর উপর দিয়ে যাওয়ার জন্য বাদশাকে বিভিন্ন সময়ে বকাবকি করতো।

এছাড়াও মাস দুয়েক আগে লিচু পাড়া নিয়েও বাদশাকে দুলাল বকাবকি করে। উভয় বিষয় নিয়ে বাদশা ক্ষুব্ধ ছিলো এবং পরবর্তীতে উক্ত ঘটনার বিষয় নিয়ে আবুল হোসেন ও বাদশা মিলে দুলাল চন্দ্র দাসকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। পরে তারা উক্ত পরিকল্পনা মোতাবেক রাত অনুমান ০৩.টার দিকে তারা দুইজন দুলাল যেখানে মাছ পাহারা দেয় সেখানে যায়, তখন দুলাল তখন ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল।

এসময়ে তারা অতর্কিতভাবে তার উপর আক্রমন চালায়। আবুল হোসেন এর ভাষ্য মতে সে নিহত দুলালের গলায় ক্ষুর দিয়ে পোছ দেয় এবং একই সাথে অপর ব্যক্তি বাদশা দুলালকে এলোপাতাড়ীভাবে কোপাতে থাকে। তারা দুইজন দুলালের মৃত্যু নিশ্চিত করে যে যার মতো বাসায় চলে যাওয়ার পথে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রসমূহ বাদশার বাসার পিছনের পূর্ব পার্শ্বের খালে ফেলে দেয়। পরে উক্ত আসামীর দেখানো ও সনাক্তমতে বাদশার বাসার পিছনের পূর্ব পার্শ্বের খাল হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও ক্ষুর উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামী আবুল হোসেন এর পরিহিত লুঙ্গি ও গেঞ্জিতে রক্তের দাগ পরিলক্ষিত হয়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আসামী বাদশা এলাকা থেকে চলে যায়। সে বর্তমানে পলাতক আছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য সর্বাত্মক অভিযান অব্যাহত আছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ