নোয়াখালীর সেনবাগে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ—ঐক্যের ডাক মান্নান–মফিজের
নোয়াখালীর সেনবাগে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ—ঐক্যের ডাক মান্নান–মফিজের
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ–সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর স্থানীয় রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুককে প্রার্থী ঘোষণা করায় তৃণমূলের একটি অংশে ক্ষোভ দেখা দেয়।
দলটির দীর্ঘদিনের কর্মী ও তৃণমূলে জনপ্রিয় নেতা কাজী মফিজুর রহমানকে মনোনয়ন না দেওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। গত কয়েকদিন সেনবাগে মশাল মিছিল, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদমূলক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তৃণমূলের একজন নেতা বলেন,“কাজী মফিজ সৎ, যোগ্য এবং কঠিন সময়ে দলের জন্য কাজ করেছেন। তাঁকেই মনোনয়ন দেওয়া উচিত ছিল। পরিবর্তন চাই তৃণমূলের মানুষ।”
এদিকে স্থানীয় পর্যায়ে গুঞ্জন চলছে—কাজী মফিজুর রহমান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যদিও এ বিষয়ে তিনি এখনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেননি। তবে তাঁর সমর্থকদের আলোচনায় বিষয়টি জোরালোভাবে উঠে এসেছে।
এরই মধ্যে বিএনপির আরেক সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রার্থী ও সৌদি আরব বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল মান্নান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন। কাজী মফিজকে সঙ্গে নিয়ে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেন—
“সেনবাগ-সোনাইমুড়ীর মাটি ও মানুষের জন্য আজ থেকে আমাদের ঐক্যবদ্ধ যাত্রা শুরু। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত ও মানুষের পরিবর্তনের আশা—সব বিবেচনায় আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।”
তাঁর এই বার্তাটি সেনবাগের রাজনৈতিক অঙ্গনে ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। দীর্ঘদিনের গ্রুপিং ও বিভাজনের মধ্যেও এই ঐক্যের ঘোষণা বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা।
তবে বাস্তবে, দলীয় বিভক্তি, মনোনয়ন-সংক্রান্ত বিভ্রান্তি এবং সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থিতা—সব মিলিয়ে ২০২৬ সালের নির্বাচন বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে।
অন্যদিকে, এ আসনে জামায়াতের জেলা আমির অধ্যক্ষ সাইয়্যেদ আহমদ ইতোমধ্যেই একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন, যা বিএনপির ভোটভিত্তিকে আরও প্রভাবিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে,“বিএনপি যদি তৃণমূলের ক্ষোভ নিরসন ও দলীয় গ্রুপিং মোকাবিলা করতে না পারে, তাহলে নোয়াখালী-২ আসনে তাদের লড়াই কঠিন হয়ে উঠবে।”
পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল—শেষ পর্যন্ত ঐক্য নাকি বিভাজন, সেটিই নির্ধারণ করবে এ আসনে বিএনপির ভবিষ্যৎ।

















