শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া খুলনা থেকে:
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে
রবিবার ২৭অক্টোবর সকাল ১০টায় ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণে সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন,
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মহাদেব চন্দ্র সানা, খুলনা জেলা অতিরিক্ত উপ পরিচালক মোঃ মিজান মাহমুদ,
বক্তব্য দেন ডুমুরিয়া উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ওয়ালিদ হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ হামিদুল ইসলাম, মোঃ আরিফুল ইসলাম, টেনার মোঃ হাবিবুর রহমান, কৃষিবিদ অধীর কুমার বিশ্বাস ও সৌমেন্দ্র কুমার মন্ডল প্রমুখ।।
বক্তব্য বক্তরা বলেন বাংলাদেশে উৎপাদিত গুরুত্বপূর্ণ কন্দাল ফসল সমূহের মধ্যে রয়েছে আলু, মিষ্টি আলু, গাছ আলু বা মেটে আলু, পানিকচু, লতিকচু, মুখীকচু, ওলকচু, কাসাভা ইত্যাদি। অধিক শর্করা থাকার কারণে অনেক দেশেই এসব ফসল প্রধান খাদ্য বা সম্পূরকখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কন্দাল ফসলসমূহ ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণ ও খনিজসহ অনেক পুষ্টিকর উপাদানে সমৃ দ্ধ থাকে।
বাংলাদেশের কৃষিতে কন্দাল ফসল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ধান এবং গমের পরই তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আলু। জাতীয় পর্যায়ে কন্দাল ফসলের গড় উৎপাদন আশাব্যাঞ্জক নয়। কন্দাল ফসলের গড় উৎপাদন যে কোনো উন্নত এমনকি উন্নয়নশীল দেশের ফলনের চেয়েও কম। অথচ উন্নত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কন্দাল ফসলের গড় উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব। ফলন কম হওয়ার মূলকারণ হলো: মানসম্পন্ন বীজের অভাব, স্থানীয় ও নিম্নমানের বীজ ব্যবহার, কৃষকের প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাব, মাটিতে জৈব সারের অভাব, সুষম সার ব্যবহার না করা, পণ্যের সঠিক দাম না পাওয়া।
এ সকল সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে মানসম্পন্ন বীজের ব্যবহার নিশ্চিত করা, কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে পরিচিত করা, বিভিন্ন উন্নত জাতের মাঠ প্রদর্শনী স্থাপন ও মাঠদিবস আয়োজনের মাধ্যমে কৃষকদের নতুন নতুন জাত, উৎপাদন কৌশল সম্পর্কে অবহিত করা, উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষিত করা, জৈব সার ও সুষম সার প্রয়োগ নিশ্চিত করা। কৃষকের পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আলু সংরক্ষণাগার তৈরির মাধ্যমে সংরক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধি করা, মানসম্পন্ন কন্দাল ফসল বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে বাজার সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন কোম্পানির সাথে কৃষকদের সংযোগ স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের বিভিন্ন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ক তথ্য ও দিকনির্দেশনা একান্ত প্রয়োজন। কৃষক প্রশিক্ষণ হাতবই প্রণয়নে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিবর্গ ও প্রকল্পের সকল কর্মকর্তাদের অসামান্য অবদান রয়েছে। এ প্রশিক্ষণ সহায়িকার মানোন্নয়নে যে কোনো পরামর্শ সাদরে গ্রহণ করা হবে। প্রকল্পের কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে সঠিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পাঠ পরিকল্পনা ও পাঠসহায়িকা সংবলিত এ কৃষক প্রশিক্ষণ হাতবই একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।