এনামুল হক রাশেদী, বাঁশখালী চট্টগ্রাম থেকেঃ
চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলায় অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করার রমরমা বানিজ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে পৌর কাউন্সিলর কর্তৃক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় এখন বাঁশখালীর সর্বত্র আলোচনা, সমালোচনা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।
সাংবাদিককে পৌরকাউন্সিলরের অশোভন ভাষায় গালিগালাজ হুমকির অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড হওয়ার সাথে সাথে মুহুর্তেই ভাইর্যাল হয়ে পড়ে এবং বাঁশখালীর সর্বত্র “টক অব দ্যা বাঁশখালীতে” পরিনত হয়ে অভিযুক্ত পৌর কাউন্সিলরের বিরোদ্ধে তীব্র নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় উঠে।
সেই নিন্দা ও সমালোচনার ঝড়ের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রচন্ড ভয়ঙ্কর ঘূর্নিঝড় “মোখা” র গতির সাথে তাল মিলিয়ে। ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী বাঁশখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং বিজয় টিভি, জনপ্রিয় অনলাইন টিভি চ্যানেল “সি-প্লাস” ও দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি জসীম উদ্দিন ইতিমধ্যে বাঁশখালী পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের অভিযুক্ত পৌর কাউন্সিলর আব্দুর রহমানের বিরোদ্ধে বাঁশখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
জানা যায়, বাঁশখালী পৌরসভাধীন আসকরিয়া পাড়া ও বড়ুয়াপাড়া এলাকার জলদি ছড়া খননের মাটি রাতের অন্ধকারে বিক্রি করে আসছিল একটি সিন্ডিকেট। এ নিয়ে সাংবাদিক জসীম উদ্দিন তথ্য সম্প্রচার নীতিমালার আলোকে অবৈধভাবে মাটি কাটা ও বিক্রির সকল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করো সি-প্লাস টিভিতে সংবাদ প্রচার করেন।
সংবাদ প্রচারের জের ধরে ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ২৭ মিনিটের সময় পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর আবদুল গফুর তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর (০১৮৩৫-৪৮৭০৪৮) থেকে সাংবাদিক জসীম উদ্দিনের ব্যক্তিগত নম্বর (০১৮৫০-৬১৪১৭১) এ ফোন করে বিশ্রী ও অশোভন ভাষায় গালাগাল করেন। এসময় কাউন্সিলর আবদুল গফুর জসীম উদ্দিনকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘তুই কি ওখানে আমাকে দেখেছিস মাদারচুদ? আমার নাম দিলি কেন নিউজে? বাঁশখালীতে সাংবাদিক শুধু তুই নাকি? তুই দুই কাউন্সিলর না লেখে এক কাউন্সিলর লেখে দ। আমি কাল ৫০০ লোক নিয়ে আসতেছি। তুই রেকর্ড করে রাখ আলার পোয়া আলা। তুই এনে সাংবাদিক হিসেবে বেশি চালাক’–।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল গফুরকে বারবার ফোন করলেও তাঁর নাম্বার সর্বক্ষন ব্যস্ত পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বাঁশখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জসীম উদ্দিন বলেন, ‘কাউন্সিলর গফুরের সাথে আমার কোনও ধরনের বিরোধ নেই। জলদি ছড়া খননের নামে রাতের অন্ধকারে মাটি বিক্রি চলছিল। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় তিনি আমাকে ফোন করে তুই রেকর্ড করে রাখ বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এখন।’
এদিকে ভূক্তভোগী সাংবাদিক জসীম উদ্দিন নিজের ও পরিবারের ক্ষতির শঙ্কায় কাউন্সিলর আবদুল গফুরের বিরুদ্ধে ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে বাঁশখালী থানায় হাজীর হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামাল উদ্দিন (পিপিএম) বলেন, ‘সাংবাদিক জসীম উদ্দিনকে হুমকির ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব পালনের জেরে কাউন্সিলরের হুমকির ঘটনায় পারদ গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে সোস্যাল মিডিয়ায় নিন্দা ও সমালোচনার ঝড়। মিডিয়াঙ্গনেও তোলপাড় শুরু হয়েছে কাউন্সিলরের হুমকির নিন্দনীয় এ ঘটনায়।