বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রেমিকের হাতে নারী আনসার সদস্য আশা নামের এক ব্যক্তি খুন হয়েছে।
পরোকিয়া প্রেমের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে বগুড়ার শিবগঞ্জের নারী আনসার সদস্য আশা দেবী মোহন্তকে হত্যা করেছেন একই এলাকার মোঃ নয়ন ইসলাম। গ্রেপ্তারের পর বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কাছে এমন জবানবন্দি দেয় প্রেমিক।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী নিজ কার্যালয়ে গনমাধ্যম কর্মীদের এইসব তথ্য জানান।
বুধবার দিবাগত রাতে নয়ন ইসলামকে (২৩) সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ। মোঃ নয়ন শিবগঞ্জ উপজেলার বানাইল পশ্চিমপাড়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। এর আগে মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে নিজ ঘরের খাটের উপর মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় আশা দেবী মোহন্তের। তিনি বানাইল পশ্চিমপাড়ার ভজন কুমার মোহন্তের স্ত্রী এবং শিবগঞ্জ পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের আনসারের দলনেত্রী।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে নয়ন ও আশা দেবীর মধ্যে গত প্রায় ৯ মাস আগে থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নিহত আশা দেবী বিবাহিত ছিলেন। আর নয়ন অবিবাহিত। তাদের মধ্যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক চলমান ছিল।
এরই মধ্যে গত ৩ মাস আগে নয়ন বিয়ে করেন। এরপর থেকে আশা দেবীর সাথে নয়ন সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। আর এ নিয়েই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও দ্বন্দ্ব তৈরী হয়।
এসবের এক পর্যায়ে পরকীয়ার সম্পর্ক গোপন রাখতে আশা দেবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন নয়ন বলে জানান এসপি সুদীপ কুমার। এসপি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৩ অক্টোবর রাতে আশা দেবী যখন তার ডিউটি থেকে বাসায় ফিরছিলো তখন পথিমধ্যে নয়ন তার পিছু নেয়। আশা দেবী বাড়িতে প্রবেশ করে পুজায় যাওয়ার জন্য তার আনসার ভিডিপির পোশাক পরিবর্তন করছিলেন। ওই সময় বাড়িতে কেউ ছিলো না। সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, এমন সময় নয়ন বাড়ির প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করে আশা দেবীর ঘরে যায়। নয়নকে দেখে আশা দেবী রাগ করলেও তার সাথে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক করে। এরপর নয়ন মোবাইল চার্জারের ক্যাবল দিয়ে আশা দেবীর মুখের মধ্যে পেচিয়ে দিয়ে এবং পাশে থাকা ওড়না দিয়ে আশা দেবীর গলা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তার মরদেহ সোফার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তারের পর নয়ন ইসলাম জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাকে আদালতে নেয়া হয়। সেখানে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন নয়ন।
গত ২৩ অক্টোবর রাতে পূজার মণ্ডপে দায়িত্ব পালন শেষে বাড়িতে ফেরার পর খুনের শিকার হন আশা দেবী মোহন্ত। তিনি বানাইল উত্তরপাড়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। পরে ২৪ অক্টোবর নিহতের মা সন্ধ্যা রানী মোহন্ত বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।