আবদুল হামিদ, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের মধুপুরে হাজারো জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন এ্যাডভোকেট মো. ইয়াকুব আলী। সকাল ৮টা হতে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত অত্যান্ত সুষ্ঠু পরিবেশে উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যদিয়ে নিরপেক্ষ ভাবে ভোট গ্রহনের মাধ্যমে শেষ হলো ১ম ধাপে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
মধুপুরের ঐতিহ্যবাহী শাল গজারী বন বেষ্ঠিত পাহাড়ী লালমাটির অঞ্চলের মানুষ প্রায় দীর্ঘ ৩৪ বছর পর ২য় বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান পেলেন।
৯০ দশকে বৃহত্তর মধুপুর ধনবাড়ী নিয়ে গঠিত উপজেলায় পাহাড়ি অঞ্চলের সরকার পরিবার থেকে প্রথমবারের মতো আব্দুল বাছিদ সরকার মোমবাতি প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয় লাভ করেন।
হিন্দু, বোদ্ধ, খৃষ্টান আদিবাসী মিলে রাজনৈতিক মতাদর্শ ভুলে এক কাতারে সবাই চলে আসেন আব্দুল বাছিদ সরকার কে বিজয়ী করতে।
এবারেও উপজেলা নির্বাচনে জাতী ধর্ম, দলমত ভুলে সবাই একজন মানুষ গড়ার কারিগর এডভোকেট ইয়াকুব আলীকে বেছে নিয়েছেন। তিনি একাধারে শিক্ষক,এ্যাডভোকেট, উপজেলার শোলাকুড়ি ইউনিয়ন থেকে চার বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি। তিনি একজন সৎ সাদা মনের মানুষ বলেই সর্বস্তরের ৭৩৩২৮ জন ভোটার ব্যালটের মাধ্যমে তার প্রমান দেখিয়েছে।
এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছয়জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ৫৫ হাজার ২১৮ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের একজন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৪১৯ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৯৮ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ছিলো ৯০টি এবং ভোটকক্ষ ৬০৪টি।
নির্বাচনের পরিবেশ অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নিয়োজিত ছিলো সাত প্লাটুন বিজিবি, দুই প্লাটুন র্যাব, প্রতিটি কেন্দ্রে চারজন পুলিশ, ১৫ জন আনসার সদস্য এবং একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচন পরিদর্শন টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার। তার দিকনির্দেশনায় মধুপুর সহকারী পুলিশ সুপার ফারহানা আফরোজ জেমি ও থানা অফিসার ইনচার্জ ইনচার্জ মোল্লা আজিজুর রহমান তাঁর চৌকস পুলিশ অফিসারদের নিয়ে মধুপুর উপজেলাকে নিরাপত্তার চাদরের প্রাচীর তৈরি করেন। যেকারণে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এখানে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীক নিয়ে এ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী ৭৩৩২৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ৪৪৪১৫ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন মো. সজীব এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ৭২৯৯০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন নিগার সুলতানা রুবি।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় এ উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হওয়ায় দেশে আবারও নতুন করে ভোটের পরিবেশ খোঁজে পেয়েছে সর্বস্তরের জনগণ। প্রতিহিংসা, আক্রোশ, বিভেদ ভুলে নতুন এই উপজেলা চেয়ারম্যান হোক সকল মানুষের, প্রতিটি নাগরিকের এমন প্রত্যাশা করেন মধুপুর উপজেলাবাসী।