০৬:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫

ডুমুরিয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি শিম চাষে লাভবান কৃষক

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি:
শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি:

ডুমুরিয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি শিম চাষে লাভবান কৃষক

চলতি মৌসুমে অধিক লাভের আশায় আগাম জাতের শিম চাষ করেছেন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনা গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমানসহ অনেক কৃষক ভাইয়েরা। আবহাওয়া ভালো ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় শিম চাষ করে বাজিমাত করেছেন তারা।

শিম চাষী হাবিবুর রহমান এবারে প্রায় ৩০/৩৫ শতাংশ জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের শিম চাষ করেছেন। ২ সেপ্টেম্বর বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাবিবুর রহমানের চাষ করা জমির আনাচে-কানাচে গাছগুলো থোকায় থোকায় শিমে ভরে গেছে।

শিম চাষী হাবিবুর রহমান জানান, তিনি প্রতি বছর বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেন। এবার তিনি বারি জাতের শিম চাষ করেছেন। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের শেষে অথবা ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে ওই জমিতে শীতকালীন আগাম জাতের শিম লাগান তিনি। ভালো ফলনের জন্য গাছের যত্ন নিচ্ছেন বলে জানান। এছাড়াও এলাকার কৃষি অফিসের পরামর্শ নেন তিনি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ক্ষেতজুড়ে শিম গাছে ফুল এসেছে। তিনি আশা করেন কাঙ্ক্ষিত ফসল হবে। খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনার শীম চাষী শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও খালেক গাজীও এই জাতের শিম লাগিয়েছেন।

তারা জানান, শিম চাষে শ্রমিক খরচ, সুতা, কীটনাশক, পানি, সারসহ প্রতি বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে এক লাখ টাকার বেশি বিক্রি করা সম্ভব।

একই গ্রামের শিম চাষী শিক্ষক শেখ মাহতাব হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে লীজ ঘেরের আইলের জমিতে বারি-১ জাতের শিম চাষ করেছেন, ফুল ভালো দেখা যাচ্ছে। সঠিকভাবে পরিচর্যার করলে তিনি ওই ক্ষেত থেকে সপ্তাহে দুইবার ৪ থেকে ৫ মণ করে শিম উত্তোলন করতে পারবেন। আগাম শিমের ভালো বাজারদর পাওয়ায় শিম চাষ করে তিনি এখন অনেক স্বাবলম্বী। বর্তমানে সব ধরনের সবজির বাজার দর অনেক ভালো। এমন অবস্থা চলমান থাকলে আর আবহাওয়া ভালো থাকলে শিম চাষ করে অনেক লাভ হবে বলে আশা করেন তিনি।

তার সাফল্য দেখে অনেকেই শিম চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, শিম চাষ বাংলাদেশে একটা বিপ্লব ঘটিয়েছে। এখন বছরজুড়ে শিম চাষ করেন কৃষকরা।

শিম বাংলাদেশের একটি প্রাচীন সবজি, ফলে কৃষকের কাছে এটি গুরুপূর্ণ। দাম ভালো থাকায় কৃষকরা এতে অনেক লাভবান হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ওইসব এলাকায় ব্যাপক সবজি চাষ হচ্ছে এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আগাম জাতের শিম এলাকার চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। এবার খুলনা জেলায় প্রায় ৫৪০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম বিভিন্ন জাতের শিম চাষ হয়েছে।

ডুমুরিয়ার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইন্সাদ ইবনে আমিন বলেন চলতি মৌসুমে অত্র উপজেলায় প্রায় ২৪০০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৩১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আগাম শিম আবাদ হয়েছে। বাজারে সবজির দাম ভালো পাওয়ায় আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন বেশিরভাগ চাষী।

Please Share This Post in Your Social Media

আপডেট: ০৪:২৮:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৫৭

ডুমুরিয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি শিম চাষে লাভবান কৃষক

আপডেট: ০৪:২৮:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডুমুরিয়ায় আগাম শীতকালীন সবজি শিম চাষে লাভবান কৃষক

চলতি মৌসুমে অধিক লাভের আশায় আগাম জাতের শিম চাষ করেছেন খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনা গ্রামের মোঃ হাবিবুর রহমানসহ অনেক কৃষক ভাইয়েরা। আবহাওয়া ভালো ও জমি চাষের উপযোগী হওয়ায় শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় শিম চাষ করে বাজিমাত করেছেন তারা।

শিম চাষী হাবিবুর রহমান এবারে প্রায় ৩০/৩৫ শতাংশ জমিতে উচ্চফলনশীল জাতের শিম চাষ করেছেন। ২ সেপ্টেম্বর বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাবিবুর রহমানের চাষ করা জমির আনাচে-কানাচে গাছগুলো থোকায় থোকায় শিমে ভরে গেছে।

শিম চাষী হাবিবুর রহমান জানান, তিনি প্রতি বছর বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেন। এবার তিনি বারি জাতের শিম চাষ করেছেন। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের শেষে অথবা ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে ওই জমিতে শীতকালীন আগাম জাতের শিম লাগান তিনি। ভালো ফলনের জন্য গাছের যত্ন নিচ্ছেন বলে জানান। এছাড়াও এলাকার কৃষি অফিসের পরামর্শ নেন তিনি। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ক্ষেতজুড়ে শিম গাছে ফুল এসেছে। তিনি আশা করেন কাঙ্ক্ষিত ফসল হবে। খর্নিয়া ইউনিয়নের টিপনার শীম চাষী শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও খালেক গাজীও এই জাতের শিম লাগিয়েছেন।

তারা জানান, শিম চাষে শ্রমিক খরচ, সুতা, কীটনাশক, পানি, সারসহ প্রতি বিঘা জমিতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে এক লাখ টাকার বেশি বিক্রি করা সম্ভব।

একই গ্রামের শিম চাষী শিক্ষক শেখ মাহতাব হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে লীজ ঘেরের আইলের জমিতে বারি-১ জাতের শিম চাষ করেছেন, ফুল ভালো দেখা যাচ্ছে। সঠিকভাবে পরিচর্যার করলে তিনি ওই ক্ষেত থেকে সপ্তাহে দুইবার ৪ থেকে ৫ মণ করে শিম উত্তোলন করতে পারবেন। আগাম শিমের ভালো বাজারদর পাওয়ায় শিম চাষ করে তিনি এখন অনেক স্বাবলম্বী। বর্তমানে সব ধরনের সবজির বাজার দর অনেক ভালো। এমন অবস্থা চলমান থাকলে আর আবহাওয়া ভালো থাকলে শিম চাষ করে অনেক লাভ হবে বলে আশা করেন তিনি।

তার সাফল্য দেখে অনেকেই শিম চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, শিম চাষ বাংলাদেশে একটা বিপ্লব ঘটিয়েছে। এখন বছরজুড়ে শিম চাষ করেন কৃষকরা।

শিম বাংলাদেশের একটি প্রাচীন সবজি, ফলে কৃষকের কাছে এটি গুরুপূর্ণ। দাম ভালো থাকায় কৃষকরা এতে অনেক লাভবান হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে ওইসব এলাকায় ব্যাপক সবজি চাষ হচ্ছে এবং কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আগাম জাতের শিম এলাকার চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। এবার খুলনা জেলায় প্রায় ৫৪০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম বিভিন্ন জাতের শিম চাষ হয়েছে।

ডুমুরিয়ার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইন্সাদ ইবনে আমিন বলেন চলতি মৌসুমে অত্র উপজেলায় প্রায় ২৪০০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে যার মধ্যে প্রায় ৩১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আগাম শিম আবাদ হয়েছে। বাজারে সবজির দাম ভালো পাওয়ায় আগাম সবজি চাষে ঝুঁকছেন বেশিরভাগ চাষী।