নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
গতকাল তারাব পৌরসভার বরপা এলাকাতে ছাত্রলীগ রিয়াজ বাহিনীর হামলা,প্রভাব খাটানোকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিল্লাল নামের এক রেস্তোরাঁর বাবুর্চি গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের আরো ১০ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজন,বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (৩০ মে) বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার তারাব পৌরসভার বরপা বাস স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান,বিল্লালের কোমরে একটি গুলি বিদ্ধ হয়েছে। তবে বিল্লালের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত। ঘটনাটি রূপগঞ্জ থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান,বিকালে তারাব পৌরসভার বরপা বাস স্টেশন এলাকায় সিফাত নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী বাইক চালক প্রাইভেট কারের সাথে লেগে সড়কে পড়ে যায়। এসময় বাইক চালক ও প্রাইভেট কার চালকের মাঝে বাগবিতন্ডা হয়,কথা কাটা কাটি হয়। পড়ে প্রাইভেট কার চালকের পক্ষে তারাব পৌর যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ সাউদ ও বাইক চালকের পক্ষে উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজের লোকজন তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এসময় দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এসময় উত্তেজিত হয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েন। গোলাগুলির এক পর্যায়ে এসময় রেস্তোরাঁর বাবুর্চি বিল্লাল গুলিবিদ্ধ হন।
এছাড়া ওই রেস্তোরাঁর সহকারী বাবুর্চি আফজাল,গ্লাস বয় আশরাফুল,চাইনিজ তৈরির সহকারী কামাল,রেস্তোরাঁর ম্যানেজার মাসুদসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। পরে স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ বিল্লালকে আশংকাজনক অবস্থায় স্থানীয় ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। বাকি আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখেন।
রেস্তোরাঁটির মালিক মো: নাদিম সাউদ গণমাধ্যমকর্মীদের জানান,বিকেলে রেস্তোরাঁর ভেতরে রান্নাঘরে কাজ করছিলেন বিল্লাল। তখন বেশ কয়েকজন রিয়াজ ছাত্রলীগ বাহিনীর লোকজন দৌড়ে রেস্তোরার ভিতর ঢুকে খেতে বসা এক যুবককে মারদর শুরু করে। তখন ঐ যুবক তাদের হাত থেকে বাঁচতে বাবুর্চিখানার ভিতরে ঢুকে পড়লে হামলাকারীরাও সেখানে ঢুকে। এক পর্যায়ে তাদেরই কারোর ছোড়া গুলিতে আহত হয় বাবুর্চি বিল্লাল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল নিয়ে যা হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করা হয়।স্থানীয় এলাকাবাসী জানান,পান থেকে চুন খসলেই অস্ত্রেশস্ত্রে নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে রিয়াজ ছাত্রলীগ বাহিনীরা।
ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ কোন ঘটনার সংবাদ পেলেই পিস্তল নিয়ে ছুটে আসেন,এতে করে সাধারন পথচারীসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। এসব সন্ত্রাসী গ্রুপের কারণে আতংকে দিনযাপন করতে হয়।এবিষয়ে পৌর যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ সাউদ বলেন,সিফাতের বাইক শ্রমিকলীগ নেতা মোহাম্মদ আলীর প্রাইভেট কারে লেগে যায়। মোহাম্মদ আলী আমাকে জানালে আমি ঘটনাস্থলে এসে মিমাংসার চেষ্টা করি। এসময় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজের সন্ত্রাসী লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। রিয়াজ বাহিনীতে যারা আছেন,রিফাত,মামুন,সোহান,দীপ,আফজাল,শাওন,লেংরা শামীম, সবুজ,জহির,সজিব,জীবন দাস,দীন ইসলাম,আরমান,সৈকত,পারভেজ,আতিক,নয়ন,রুবেল,রিজম,মাহিম,নাঈম,সাকিল,অন্তু দাসসহ আরো কিশোর গ্যাং বাহিনী। রিয়াজ গ্রুপের গুলিতে,এসময় রেস্তোরাঁর বাবুর্চি গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানজির আহমেদ রিয়াজের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি মুঠোফোন কল রিসিভ করেননি। তার সাথে কথা বলতে চাইলেও কথা বলতে চাইনি সে। তাদের ক্ষমতার দাপটে সন্ত্রাস বাহিনীদের তান্ডবে গোটা রূপগঞ্জবাসী অতিষ্ঠ। তাদের হামলায়,রিয়াজ ছাত্রলীগ বাহিনীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রাজু নামের এক যুবলীগ কর্মী কুপ খেয়ে গুরুতর আহত হন। ঘটনাটি রূপগঞ্জ থানা ওসিকে জানানো হয়। ওসি বলেন, তাদের বিষয়ে অনেক অভিযোগ।
রূপগঞ্জ থানার ওসি/তদন্ত আতাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে,আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।