পেকুয়ায় স্মরনকালের স্মরনীয় তাফসির মাহফিলে ডঃ আল্লামা মিজানুর রহমান আজাহারী
স্বৈরাচারের রোষানলে শিকার হয়ে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে নির্বাসিত থাকার পর দেশে এসে পাঁচ বছর পর দেশের মাটিতে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলায় প্রথম ওয়ার্ম আপ মাহফিল থেকে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানালেন আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ইসলামীক স্কলার ডঃ আল্লামা মিজানুর রহমান আজাহারী। বাংলাদেশ ভূ-খন্ডে স্বাধিনতাত্তোর স্মরনকালের স্মরনীয় পেকুয়ার এই তাফসিরুল কোরআন মাহফিল শুধু কক্সবাজার চট্টগ্রাম নয়, সারা বাংলাদেশে তোলপাড় তুলেছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের পেকুয়ার বৃহত্তর সাবেক গুলদি তাফসীর ময়দানে মাহফিলের প্রধান আয়োজক পেকুয়ার মরহুম মাওলানা শহিদুল্লাহ স্মৃতি সংসদ সমাজ উন্নয়ন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ নিজামীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে রাত পৌনে ১০ টার দিকে প্রধান মুফাসসিরের বক্তব্যে ডঃ আজাহারী এই ঐক্যের আহ্বান জানান। ডঃ আজাহারী মহাগ্রন্থ আল কোরআনের বাণীর পাশাপাশি সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশের রোল মডেলের দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছে। চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যাকান্ডের পরও মুসলিমরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে, মন্দিরে মাদ্রাসার ছাত্ররা পাহারা দিয়েছে, তা সত্ত্বেও প্রতিবেশী দেশ ভারত নানা গুজব প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে যা বন্ধুসুলভ আচরণ নয় বরং তাঁরা নিজেদের নিয়ে না ভেবে প্রভুত্ব আচরণ দেখাচ্ছে।
এছাড়া তিনি ভয়েস অফ আমেরিকার জরিপের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সে রিপোর্টে বাংলাদেশে এখন আগের চাইতে সংখ্যালঘুরা নিরাপদে আছে এবং ভারত গুজব ছড়ানোর জায়গায় বিশ্বে শীর্ষে রয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ডঃ আজাহারী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে আলোচনার বিষয় নির্ধারন করেছিলেন জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। সে আলোচনার বিষয়বস্তু অনুযায়ী ঐক্যের সুফলের বর্ণনা দিয়ে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুছ রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের সাথে আলোচনা করে ঐক্যের নজির সৃষ্টি করেছেন, ঠিক তেমনি এই সময়ে জাতীয় পরাশক্তি যেন দূর্বল ভাবতে না পারে সে জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী বিনির্মানে কাজ করতে হবে। নয়তো আন্তর্জাতিক পরাশক্তি দেশগুলো দূর্বল ভেবে আমাদের কাছ থেকে ট্রানজিট অথবা সেন্টমার্টিন দাবি করে বসবে।
লক্ষ লক্ষ জনতার এই তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে যুক্তরাজ্য থেকে ভার্স্যুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলার বরপূত্র আপামর জনতার প্রানপ্রিয় নেতা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র স্থায়ী কমিটির সদস্য স্বৈরাচারের জুলুম-নির্যাতনে নিস্পেষিত নেতা আলহাজ্ব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। পেকুয়া বারবাকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বিশিষ্ঠ ইসলামি চিন্তাবিদ অধ্যক্ষ মাওলানা বদিউল আলম জিহাদী ও টেকনাফ হোয়াইক্যং ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা নুর মোহাম্মদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা দক্ষিনের সেক্রেটারী কারা নির্যাতীত নেতা ডঃ শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
তাফসির মাহফিলের মুল কার্যক্রম সকাল ১০টায় শুরু হয়ে রাত ১১টায় শেষ হয়। উপস্থিত দর্শক স্রোতার ধারনানুযায়ী পেকুয়ার তাফসির মাহফিলে ১০ লক্ষাধিক দর্শক স্রোতার সমাগম হয়েছিল এবং দেশ বিদেশের প্রায় শহস্রাধীক প্রিন্ট, স্যাটেলাইট ও অনলাইন মিডিয়া ২৪ ঘন্টা ব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের কার্যক্রম সরাসরি লাইভ সহ প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। সে সুবাধে স্মরনকালের স্মরনীয় এ মাহফিলের আলোচনা সারা বিশ্ব থেকে আগ্রহী স্রোতা দর্শক সাগ্রহে দেখতে ও শুনতে পেরেছেন।
মাহফিলটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে মরহুম মাওলানা শহীদ উল্লাহ স্মৃতি সংসদ ও পেকুয়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদ।
মাহফিলে দেশ বরেন্য আলেমে দ্বীন ও ইসলামী স্কলারদের মধ্যে যারা কোরআন হাদিসের তাকরীর পেশ করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন,
হাফেজ মুফতি আমির হামজা, শায়খ মুফতি কাজী ইব্রাহীম, আল্লামা কামরুল ইসলাম সাঈদ আনসারী, মাওলানা সাদিকুর রহমান আজহারী, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল আমিন, শায়খ মাওলানা জামাল উদ্দিন, শায়েখ মুফতি জসিম উদ্দিন রহমানী, মাওলানা আব্দুল হাই মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ , মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আজহারী, শায়খ সালাউদ্দিন মাক্কী, মাওলানা মনিরুল ইসলাম মজুমদার।