স্বৈরাচারের চিহ্নিত দোসর চট্টগ্রামের শ্রমিকলীগ নেতা হাবীব এখন ব্যস্ত মানবাধিকার নেতা
স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা নানান রুপে নানান বেশে নানান কৌশলে এখন সমাজের মূল স্রোতে মিশে নিজেদের অস্থিত্বকে টিকিয়ে রেখে ছাত্র জনতার আন্দোলনের গণ অভ্যুত্থানে অর্জিত মূক্তির সফলতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে আবারো প্রিয় বাংলাদেশকে বিপর্যস্ত করার হীন অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে মূক্তিকামী জনতার স্বার্থান্বেষী একটি মহল বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা গ্রহন করে শত শহস্র ছাত্র জনতার রক্তের সাথে বেঈমানী করে সেই চিহ্নিত দোসরদের মুক্ত বাংলাদেশে আবারো জায়গা করে দেওয়ার ঘৃন্য ও নিন্দিত সুযোগ করে দেওয়ার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি সময়ে এমন একজন চিহ্নিত স্বৈরাচারের দোসর হচ্ছে জাতীয় শ্রমিকলীগ চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবীব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে ছাত্র জনতার আন্দোলন যখন রাজপথ কাঁপাচ্ছিল এবং অবশেষে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতনে এক দফা অসহযোগ আন্দোলনের ডাক আসল, ঠিক সেই উত্তাল সময়গুলোতে জাতীয় শ্রমিক লীগের চট্টগ্রাম মহানগীর একজন গুরুত্বপুর্ন নেতা হিসাবে হাবিবুর রহমান হাবীব দিনরাত তার সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মিবাহিনী নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর বি়ভিন্ন পয়েন্টে পয়েন্টে ছাত্র জনতার আন্দোলন প্রতিরোধে সারাক্ষন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। হাবীবের নেতিবাচক কর্মকান্ডের প্রতিদিনকার সংবাদ সে সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারের পতনের পর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ও শ্রমিকলীগ সহ তাদের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মিরা গা ঢাকা দিলে চট্টগ্রাম মহানগরী শ্রমিকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবীবও কিছুদিন পালিয়ে নিজেকে আড়াল করে রেখেছিল।
কয়েকদিন আত্মগোপনে থাকার পর সুচতুর হাবীব গোপনে গোপনে বিএনপি-জামায়াত পন্থি কয়েকজন স্বার্থপর গণমাধ্যম কর্মি, তথাকতিথ মানবাধিকার কর্মি ও সাংস্কৃতিক কর্মিদেরকে অনৈতিক সুবিধা প্রদান করে তাদের সাথে গোপনে আঁতাত করে আস্তে আস্তে কৌশলে জনসম্মুখে আসার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে হাবিবুর রহমান হাবীব ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকাল ৫ টায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে উপলক্ষে ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্ট এন্ড হিউম্যান রাইট ফাউন্ডেশন ও এ্যাড ভিশন বাংলাদেশ (পরিবেশ উন্নয়ন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা) এর যৌথ উদ্যোগে কদম মোবারক চট্টগ্রাম একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘মানবাধিকার ও পরিবেশ বিষয়ক’ এক আলোচনা সভায় মঞ্চে উপস্থিতি থেকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। সে আলোচনা সভায় বাংলাদেশ বৈষম্যরোধে সংস্কার আন্দোলনের চেয়ারম্যান হিসেবে হাবিবুর রহমান হাবিব উপস্থিত থেকে মঞ্চে বক্তব্য রাখেন। সেখানে উল্লেখযোগ্য আরো যারা উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাবেদ আফসার চৌধুরী, চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক কামাল উদ্দিন, ফুলকলি প্রোডাক্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক এম এ ছবুর, আইনজীবী ও লেখক এডভোকেট সংকট প্রসাদ দে সহ আরো অনেক সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
স্বৈরাচারের চিহ্নিত দোসর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রত্যেক্ষ প্রতিরোধকারী নিন্দিত এই হাবিবুর রহমান হাবীব তথাকথিত মানবাধিকারের ব্যানারে ওপেন জনসম্মুখে আসার পর থেকে নগরীতে শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ত্যাগ স্বিকারকারী অনেক পেশাজীবি মহলের প্রশ্ন স্বৈরাচারের এসব প্রেতাত্মারা কি সুবিধার বিনিময়ে কাদের চলমান সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে!
১০ ডিসেম্বরের ঐ সভায় অতিথি ও আলোচক হিসাবে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মি কামরুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে হাবীবকে চিনেননা বলে জানান।
চট্টগ্রাম নাগরিক ফোরামের মহাসচিব লেখক সাংবাদিক কামাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি হাবিবুর রহমান হাবীবকে কে দাওয়াত দিয়েছে এবং হাবীব এই সভায় উপস্থিত থাকবেন, এটা জানতেননা বলে জানান।
এ্যাড ভিশনের চেয়ারম্যান শিল্পী ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতা মাসুদ রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবীবের রাজনৈতিক পরিচয় জানতেননা বলে জানিয়ে বলেন, মুলতঃ হাবীব সাহেব আগ্রহ প্রকাশ করায় আমরা তাকে আমন্ত্রন জানিয়েছিলাম।
এ ব্যাপারে হাবিবুর রহমান হাবীব জানান, আমি শ্রমিক লীগের চট্টগ্রাম মহানগরীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি থাকলেও বর্তমান বৈষম্যবিরোধী সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সহ বিভিন্ন পেশাজীবি নেতৃবৃন্দের সাথে আমার সুসম্পর্ক ও যোগাযোগ থাকায় আমি বিভিন্ন প্রোগ্রামে যোগদান করতে আমার কোন সমস্যা হচ্ছেনা।