চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতে ইসলামী মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় শাহজাহান চৌধুরী
দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, সংসদীয় দলের সাবেক হুইপ, চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন আওয়ামীলীগ বাংলাদেশের পুরো ইতিহাসকে বিকৃত করেছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে স্বাধীনতার বিরোধী আখ্যা দিয়ে ৫৩ বছর মিথ্যার আশ্রয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে। এই আওয়ামী লীগ, শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা অপপ্রচারের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা চালিয়েছে কিন্তু তারা পারেনি। বরং তারাই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিবে। জামায়াত ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যােগে আয়োজিত বিজয় দিবসের এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সোমবার (১৬ই ডিসেম্বর) বিজয় দিবস উপলক্ষে
চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ান বাজারস্থ বাংলাদেশ ইসলামিক একাডেমি (বিআইএ) মিলনায়তনে আয়োজিত উক্ত আলোচনা সভায় নগর জামায়াতে সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরী নায়েবে আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, নগর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ ও ফয়সাল মুহাম্মদ ইউনুস, নগর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান, নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও কোতোয়ালি থানা আমীর আমির হোছাইন, চকবাজার থানা আমীর আহমদ খালেদুল আনোয়ার, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজসেবক ডা. খাইরুল আনোয়ার, কোতোয়ালী থানা সেক্রেটারি মোস্তাক আহমেদ, চকবাজার থানা সেক্রেটারি সাদুর রশিদ চৌধুরী।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ১৯৪৭, ৭০, ৭৫, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থান ২০০১ ভোট বিপ্লবের পরে ২৪ এর ৩৬ জুলাই এটাই প্রমাণ করে হিন্দুস্তান যতই ষড়যন্ত্র করুক বাংলাদেশে এক ইঞ্চি জায়গার উপরেও হিন্দুস্তান আধিপত্য বিস্তার করতে পারবেনা। কারণ এই স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও ইসলামের জন্য জামায়াতের নেতৃবৃন্দরা ফাঁসির মঞ্চেও গিয়েছে। এই স্বাধীনতার জন্য ২৪ সালের ৩৬ জুলাই ১৫৮৩ জন দামাল যুবক ছাত্ররা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়েছে। বাংলাদেশের বিডিআর হত্যাকাণ্ড এটা সম্পুর্ণ ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনা আর নরেন্দ্র মোদি তাদের গোপন ফোনালাপ ও গোপন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি বিডিআর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছিল।
তিনি আরো বলেন, বিজয় দিবসকে তারা তাদের একক সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছিল। অথচ আজকে কত সুন্দর সারাদেশে সব দলের অংশগ্রহণে বিজয় দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। বিজয় দিবসের নামে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। চিকিৎসার নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আমার দেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এক এক করে সব ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হচ্ছে।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন নগর কর্মপরিষদ সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল্লাহ ও হামেদ হাসান ইলাহি।
নগর নায়েবে আমীর পরিবেশবিদ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামীলীগ দীর্ঘ ১৮ বছর জামায়াতে ইসলামীকে বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সুযোগ দেয়নি। বাংলাদেশের মানচিত্র নিয়ে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। পূর্ব পাকিস্তানের সীমানাই বাংলাদেশের সীমানা। এই সীমানার এক ইঞ্চি জায়গাও আমরা ছাড়বো না ইনশাল্লাহ। তারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নিলে ১৯৪৭ সালে আরো বড় এলাকা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো এবং স্বাধীন সত্ত্বা নিয়ে আমরা দাঁড়িয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু তারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নেয়নি যার ফলে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করতে হয়েছে। এতে করে তারা প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী। যারা ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ মেনে নেয়নি তারা আবার ১৯৭১ সালের বঙ্গভঙ্গের সহযোগিতা করেছে তাদের স্বার্থেই। ১৯৪৭ সালকে ধারণ করতে হবে এবং সেটাকে চর্চা করতে হবে। ১৯৪৭ সালে যদি আমরা ব্রিটিশ থেকে স্বাধীনতা অর্জন না করতাম তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। কাশ্মীরের স্বাধীনতা চেয়ে তিনি বলেন কাশ্মীরে তাদের গণভোটের অধিকার দিতে হবে। বিশ্বের মানবতাবাদীদেরকে ফিলিস্তিনে স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
পাহাড়িদের কে আদিবাসী ঘোষণা দিয়ে উস্কে দিচ্ছে একটি মহল। তাদেরকে উস্কানি দিয়ে পাহাড়কে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী সব সময় স্বোচ্চার রয়েছে। কোন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র, কোন ইন্ডিয়ান ষড়যন্ত্র এদেশে বাস্তবায়ন হতে দেয়া হবে না। হয় বিজয় না হয় শাহাদাত, শাহাদাতের তামান্না নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।