শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া খুলনা থেকে:
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিনামূল্যে গবাদিপশুর বিভিন্ন সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল কবির বলেন ডুমুরিয়া উপজেলায় গত১৮/১১/২০২২ তারিখে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগদান করি, তার পর থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ১২৬টি ওয়ার্ডে ২লক্ষ গরু,৭৫ হাজার ছাগল,৩০হাজার ভেড়া ২শত মহিষ, হাঁস মুরগি ১০০১৩৫ টি সহ আরো অনেক প্রাণী রয়েছে।
কুকুরের কামড়ে ১টি ছাগল চিকিৎসা করার সময় উপস্থিত ছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলার ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ শারমিন আলম,এলডিডিপি প্রকল্পের প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ সায়রা গুলশান,ও মোঃ আশরাফুল আলম, উল্লেখ্য বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের মধ্যে একটি ছোট্ট কৃষি প্রধান দেশ যার প্রতি বর্গ কিলোমিটারে বাস করে প্রায় ১০০০ জন মানুষ যা কিনা বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বহুগুণে বেশি।
তাই বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে জনসংখ্যার দিক থেকে প্রথম সারিতে অবস্থান করছে। জনসংখ্যা প্রায় ২০ কোটি। এই বিপুল জনগোষ্ঠির সুষ্ঠু জীবন যাপনের জন্য এ দেশের প্রায় ২৩.৫ মিলিয়ন গরু, ১ মিলিয়ন মহিষ, ৩৪ মিলিয়ন ছাগল ও ৩ মিলিয়ন ভেড়া প্রাণিজ আমিষ যেমন- দুধ, মাংসের চাহিদা পূরণ, কৃষি কাজ, হাল চাষ, চামড়া রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, গ্রামীণ পরিবহনে গাড়ী টানা, জ্বালানী ও মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধির জন্য গোবর, ধর্মীয় সন্তুষ্টিতে পশু কোরবানী, কর্ম-সংস্থানসহ দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থ উর্পাজন, এবং পরিবেশ রক্ষাসহ ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। গবাদিপশু আর অবহেলিত সম্পদ নয় বরং এটি খামারীর নিকট একটি অতি মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। গবাদিপশুর গুরুত্ব অনুধাবন করেই এদেশের গ্রামীণ এলাকায় প্রায় ৭৫ ভাগের বেশি লোক কোনো না কোনো পশু-পাখি পালন করে থাকেন। তবে, গবাদিপশু প্রতিপালনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রধান সমস্যা হচ্ছে রোগ।
গবাদিপশুকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে মুক্ত রাখতে হলে বেশ কিছু বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখা প্রয়োজন তার মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পরিমাণমত সুষম খাবার সরবরাহ করা এবং কৃমি দমন ব্যবস্থা।
উল্লিখিত ব্যবস্থাগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার পাশাপাশি যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে প্রতিপালিত পশুকে নিয়মিত ভ্যাকসিন বা টিকাদানের আওতায় নিয়ে আসা। গবাদিপশুর বিভিন্ন রোগের মধ্যে কয়েকটি রোগ সংক্রামক বা ছোঁয়াচে। এ সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগগুলোতে গবাদিপশু আক্রান্ত হলে অনেকক্ষেত্রে চিকিৎসার কোনো সুযোগ বা সময় পাওয়া যায় না।
চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়ার আগেই পশু মারা যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে অনেক অর্থ ব্যয় করে দ্রুত চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়ে গবাদিপশুকে বাঁচিয়ে রাখা হলেও তা থেকে প্রত্যাশিত উৎপাদন পাওয়া যায় না। কাজেই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা হচ্ছে এই রোগগুলো যেন গবাদিপশুকে আক্রমণ করতে না পারে, তার জন্য এসব সংক্রামক রোগসমূহ প্রতিরোধকল্পে ভ্যাকসিন বা টিকা প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া।
বাংলাদেশের গবাদিপশুর ক্ষেত্রে ৮টি সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায় এবং এই রোগগুলোর বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টিকাও এ দেশে পাওয়া যায়। এ দেশে প্রাপ্ত টিকাগুলো হচ্ছে; ১. তড়কা, ২. গলাফুলা, ৩.বাদলা, ৪. ক্ষুরা রোগ, ৫. জলাতঙ্ক বা র্যাবিস, ৬. ছাগলের বসন্ত ও ৭, ছাগলের পিপিআর রোগের টিকা।