এ কে আজাদ, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি-(খুলনা)
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গড়ইখালীর খুদখালী ও লস্কর ইউনিয়নের আলমতলার ভাঙ্গন রোধ এবং বাইনতলা স্লুইচ গেট নির্মাণে ৫০ কোটি সাড়ে ৪ লাখ টাকার বাজেট দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে।
দুই এক দিনের মধ্যে ডাম্পিং কাজের উদ্বোধন করবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু। উন্নয়ন কাজ শেষ হলে অধিক ঝুকিপূর্ণ দুটি এলাকার ভাঙ্গন রোধ হওয়ার পাশাপাশি ফসল উৎপাদনের আওতায় আসবে হাজার হাজার বিঘা ফসলী জমি। উল্লেখ্য উপজেলার যে কয়টি ভাঙ্গন কবলিত এলাকা রয়েছে তার মধ্যে উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন গড়ইখালী ইউনিয়নের খুদখালী ও লস্কর ইউনিয়নের আলমতলা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা অন্যতম। এলাকাবাসীর মতে স্বাধীনতার আগে থেকেই খুদখালী এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয়।
শিবসা নদীর পানির চাপে প্রতিবছর অত্র এলাকা নতুন নতুন ভাবে ভেঙ্গে নদী গর্ভে চলে যায় বসতবাড়ি ও ফসলী জমি। ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ টাকা সরকারী অর্থ অপচয় হয়েছে, অপরদিকে অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলী জমি চলে গেছে নদীতে।সম্প্রতি সময়ে ওই এলাকার মানুষের দুঃখ, দুরাবস্থার কথা ভেবে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু’র প্রচেষ্টায় ভাঙ্গন রোধ এবং স্লুইচ গেট নির্মাণে ৫০ কোটি সাড়ে ৪ লক্ষ টাকার একটি বরাদ্দ অনুমোদন দিয়েছে সরকার। যা কাজ শুরুর অপেক্ষা মাত্র। এ বিষয়ে খুদখালী গ্রামের ৭৫ বছরের নুরমান গাজী জানান, ৫ বছর আগে আমাদের বসতবাড়ি নদীতে চলে যায়।
বর্তমানে আমরা ওয়াপদার স্লোপে বাস করি। অবনী মন্ডল জানান আমাদের বহু ফসলী জমি বাঁধ ভেঙ্গে নদীতে চলে গিয়েছে। গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস সালাম কেরু জানান ভাঙ্গন রোধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় দুর্যোগ আসলেই খুদখালী ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা নিয়ে চরম আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয় গোটা ইউনিয়ন বাসীকে। অপরদিকে লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন জানান আলমতলা রোভারডাঙ্গা এলাকার ভাঙ্গন রোধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ইতোমধ্যে এলাকার প্রায় ১শ বিঘা ফসলী জমি কড়ুলিয়া নদীতে চলে গিয়েছে। এছাড়া ইউনিয়নের বাইনতলা স্লুইচ গেট না থাকায় ২০হাজার বিঘা জমির ফসল উৎপাদন মারাত্বক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু’র প্রচেষ্টায় অধিক ঝুকিপূর্ন দুটি এলাকার ভাঙ্গন রোধ ও স্লুইচ গেট নির্মাণে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে।
উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ দিয়েছে ৫০ কোটি সাড়ে ৪ লাখ টাকা। উন্নয়ন কাজে অর্থায়ন করেছে জাইকা ও বাংলাদেশ সরকার। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্তাবধায়নে উন্নয়ন কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান এ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খুদখালীতে ৮শ মিটার ও আলমতলার ৭শ মিটার ভাঙ্গন কবলিত স্থানে সিসি ব্লক করা হবে। এছাড়া বাইনতলা একটি নতুন স্লুইচ গেট নির্মাণ করা হবে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে, দুই-এক দিনের মধ্যে এমপি মহোদয় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ডাম্পিং কাজের উদ্বোধন করবেন বলে সম্ভবনা রয়েছে। দেড় বছরের মধ্যে উন্নয়ন কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
উন্নয়ন কাজ শেষ হলে দুটি এলাকার ভাঙ্গন রোধসহ হাজার হাজার বিঘা জমি ফসল উৎপাদনের আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ভাঙ্গন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান বাবু’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসী।