এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম থেকে:
আজ সেই ভয়াল ২৯ শে এপ্রিল। ১৯৯১ সালের আজকের এইদিনে (সোমবার) বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়ন সহ চট্টগ্রাম কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় শতাব্দীর ভয়াবহতম প্রলয়ঙ্কারী ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে সরকারী হিসাবে ১,৩৮,৮৬৬ জন নিহতের কথা বলা হলেও প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের সলিল সমাধি ঘটেছিল, ২০ লক্ষাধিক গবাদী পশু মারা গিয়েছিল, গৃহহারা হয়েছিল দেড় কোটির মত মানুষ।
২৫০ কিঃমিঃ গতির ঘূর্নিঝড় ও ২০ ফুট উচ্ছতার জলোচ্ছ্বাসে এদিন বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নেই মৃত্যুবরন করেছিল ১৫ হাজারের অধিক মানুষ। মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছিল উপকুলীয় এ জনপদ। সে ধ্বংসযজ্ঞের কথা মনে পড়লে এখনো অনেক মানুষ শিউরে উঠে, কেঁপে উঠে অনেকের বুক। ভয়াল রাত কাটিয়ে ভোরের আলো ফুটে উঠার সাথে সাথে বিবেক ও মানবিকতার টানে ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোলা আকাশের নীচে সর্বস্ব এবং স্বজন হারা মানুষের অবস্থা দেখতে নিরলসভাবে ঘুরে বেড়িয়েছিল টগবগে যুবক জাহাঙ্গির, স্বজনহারাদের বুকে জড়িয়ে সমবেদনা শান্তনার বানী শুনানোর পাশাপাশি যৌবনের দীপ্ত শক্তি ও সাহসে ভর করে দিবানীশি দিক-বিদিক ছুঠে বেড়িয়েছিলেন তিনি বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে খাবার ও আশ্রয় জোগাড় করতে।
সার্বক্ষনিক পাশেই ছিলেন তিনি। তারই প্রতিদান স্বরুপ ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনতা তাদের অকৃত্রিম ভালবাসায় একই বছর ইউপি নির্বাচনে তাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে পুরুস্কৃত করেছিল।
প্রতিবছর ২৯ এপ্রিল আসলেই গন্ডামারা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আলম ভয়াল এ রাতের দুঃসহ স্মৃতির কথা স্মরন করে নিহতদের জন্য দোয়া ও তাদের স্বজনদের সাথে সমবেদনা জানিয়ে গনমাধ্যমে বিবৃতি প্রেরন করে দুঃসহ স্মৃতি বয়ে বেড়ানো মানুষগুলোর সাথেই থাকেন।
আজো এক বিবৃতিতে তিনি জানান, “সেদিন তাৎক্ষনিক আমি যা করেছিলেন সেটা ছিল উজ্জ্বিবিত বিবেক থেকে নিরেট মানবিকতার দায়িত্ববোধ। সেই বিভৎস আর্তনাদের কথা মনে পড়লে, আমার হৃদয়ে মোঁচড় দিয়ে উঠে এখনো। আজ ৩৩ বছর পরও আমি সেই ভয়ঙ্কর সুপার সাইক্লোনে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি, তাদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ যেন তাদেরকে শহীদি মর্যাদা দান করে জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম দান করেন সে প্রার্থনা করছি।