এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম থেকে:
সাহিত্যের সূর্যোদয় শ্লোগানে বাংলা সাহিত্যে কাব্য চর্চ্চার সৃজনশীল প্ল্যাটফরম এপার-ওপার বাংলার জনপ্রিয় সাহিত্য সংগঠন “বাংলা কবিতাঙ্গন”- এর ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নান্দনিক আয়োজনে আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি ও গুনিজন সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৬ এপ্রিল’২৪ ইং শুক্রবার বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কবিতাঙ্গনের নির্বাহী পরিচালক কবি মাহফুজা আহামেদ। বাংলা কবিতাঙ্গনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কবি, প্রাবন্ধিক, ইতিহাস গবেষক ফারুখ জাহাঙ্গিরের সার্বিক নির্দেশনা, তত্বাবধান ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি ছিলেন, বাংলা সাহিত্যের সম্প্রতি সময়ের আইকনিক লেখক, তারুন্যের কবি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও বাংলা একাডেমি পদক বিজয়ী কথা সাহিত্যিক রেজাউদ্দিন স্টালিন।
দেশ বিদেশের প্রায় তিন শতাধিক কবি, লেখক গুণিজনের মায়াময় উপস্থিতিতে আলোচনা সভায় অন্যতম প্রধান আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, লেখক ও গবেষক ড: ফরিদুদ্দিন ফারুক। আলোচক হিসাবে প্রাঞ্জল আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন কবি ও সাংবাদিক নাজিমুদ্দিন শ্যামল, কবি ও অভিনেতা এবিএম সোহেল রশিদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: আমিরুল ইসলাম, কবি ও ছড়াকার আতিক হেলাল, কবি ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মোসলেহ উদ্দিন, কবি হাসান মনজু, কবি ও সংগঠক রোকসানা সুখী, কবি ও সংগঠক নজরুল বাঙালি, কবি ও শিক্ষক অধ্যাপক জি এম সামদানী, কবি মনোয়ারা মেরী।
আলোচকবৃন্দ তাদের আবেগময় বক্তব্যে সাহিত্যকে সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জনের হাতিয়ার ও তোষামোদের উপলক্ষ না করে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসাবে লেখকদের চিন্তনকে চর্চ্চায় রুপান্তরের আহ্বান জানান। রবিন্দ্র, নজরুল, সুকান্ত, মাইকেল, শামসুর রহমান, আল মাহামুদদের মত সাহিত্য ইতিহাসের দিকপালরা কারো সাথে কারো মিল খুঁজে না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে আলোচকরা আরো বলেন, কাউকে অনুকরন ও তোষামোদ পরিহার করে, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সত্যের উপর নির্ভর করেই সাহিত্য চর্চ্চায় নিমগ্ন হতে হবে।
কবি ও লেখকদের ফেসবুক ও ইউটিউব লেখকের সমালোচনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আলোচকবৃন্দ তাদের আলোচনায় বলেন, “প্রযুক্তির উৎকর্ষতার যুগে দেশের কর্নধার থেকে শুরু করে সকল পেশাজীবীদের ফেসবুক ইউ টিউব একাউন্ট রয়েছে, থাকবে, তাই বলে কি একজন কবি, সাহিত্যিক, সংগীত শিল্পীকে কেউ সোস্যাল মিডিয়ার লেখক বলতে পারে?”
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কবি ও সংগঠক জেসমিন দীপা, কে এম সফর আলী, ভারত থেকে আগত কবি ও চিন্তক শান্তনু বন্দোপ্যাধ্যায়, কবি সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী, কবি ও সম্পাদক জয়নুল আবেদীন, লেখক নুরুল হুদা, কবি নিলয় চৌধুরী ও সিমলী চৌধুরী।
বর্নাঢ্য অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরীতে প্রায় একশত আশিজনকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য সম্মাননা ক্রেস্টে ভূষিত করা হয়। যার মধ্যে কাব্যরত্ন সম্মাননা অর্জন করে কবি মুহম্মদ আসাদুল্লাহ মহান। আজীবন সম্মাননা পেলেন কবি হাসান মনজু, কবি ইঞ্জি: মহিউদ্দিন, কবি সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী এবং কবি বাবুল হোসেন বাবলু। বর্ষসেরা কবি সম্মাননা অর্জন করেন খলিলুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, বিশ্বজিৎ সেন, ওমর ফারুক পাটোয়ারী, স্বপন সরকার, মুজিবর রহমান বকুল, রেশমা বেগম, আসাদুল হক ও যীশু সেন। বর্ষসেরা কাব্যপ্রেমী সম্মাননা পান কবি মনোয়ারা মেরী, রকিবুল হাসান গোলজার, জেবুন্নেছা জেবু ও চৈতন্য বিশ্বাস। উদীয়মান সেরা কবি সম্মাননা পান মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।
এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও ভারত থেকে আগত কবি ও গুণিজনেরা বাংলা কবিতাঙ্গনের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে কবিতা আবৃত্তি করে দর্শকদের মোহিত করেন ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।