বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ার সোনাতলায় ফাতেমা ডায়গনষ্টিকে সিজারের পর নবজাতকের মৃত্যু। প্রসুতিকে আটকে রেখে অতিরিক্ত বিল আদায়ের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। উপজেলার সৈয়দ আহম্মদ কলেজ বটতলা এলাকার সোনালী হাসি কমিউটিনিটি হসপিটাল এন্ড ফাতেমা ডায়গনষ্টিক এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন প্রসুতির নিকটতম স্বজনরা।
প্রসুতির পিতা মিজানুর রহমান জানায়,গত ২৮ জানুয়ারী রবিবার প্রসব বেদনায় কাতর জাকিয়াকে ফুসলিয়ে ৫ হাজার টাকায় সিজারের অপারেশন করার প্রোলভন দিয়ে ভর্তি করানোর পর ঐ দিন বিকাল ৫টায় সিজার এর অপারেশন করার পর নবজাতক বাচ্চার অবস্থা আশংকাজনক হলে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠায় কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর উক্ত নবজাতক বাচ্চাটি মারা যায়।
তিনি আরও জানান, প্রথমে ৫ হাজার টাকা মিটলেও পরবর্তীতে আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা চায় এই হাসপাতালের পরিচালক। তিনি বলেন, রুগিকে ইমাজের্ন্সি ৪৮শ টাকা দামের একটা ইনজেকশন দিতে হবে। আমাদের ফার্মেসী থেকে নিয়ে আসেন। এছাড়াও তিনি ১ ব্যাগ রক্ত কেনার কথা বলেন। সব মিলিয়ে তিনি আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু আমার মেয়ে জানান কোন রক্ত ও ইনজেকশন দেওয়া হয়নি।
তার পরেও তিনি এ টাকা দাবি করে আমাদের আটকে রেখে আমার মোবাইল কেড়ে নেন। আমরা নিতান্ত গরিব মানুষ। এখানে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে না পারার কারনে আমরা বাড়ি যেতে পারছিনা। সরেজমিনে রুগির সাথে কথা বললে প্রসুতি জাকিয়া বলেন, এখানে চিকিৎসা নিতে আসায় আমার বাচ্চা মারা গেছে। আমরা গরিব মানুষ। ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করার সামর্থ্য আমাদের নেই। ৫হাজার টাকায় অপারেশন করার কথা বলে এখন ১৫হাজার টাকা চাচ্ছে। এ সময় সোনালী হাসি কমিউটিনিটি হসপিটাল এন্ড ফাতেমা ডায়গনষ্টিক এর মালিক হুমায়ন কবির ইমরান সাংবাদিকদের সামনে রুগিকে ধমক দিলে রুগি আর কোন কথা বলেননি।
এ ব্যপারে পরবর্তীতে রুগির স্বামী নুর আলমের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ওখানে টাকার জন্য অনেক চাপ দিচ্ছে। এখন আমি দিনমজুর কোনমতে চলে সংসার। মোবাইল বিক্রি করে ২হাজার টাকা জমা দিছি কিন্তু আরও ১৩ হাজার টাকা চাচ্ছে। ওদের অবহেলার কারনে আমার বাচ্চাটা মারা গেছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ডায়নগস্টিক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে ডাক্তার হুমায়ন কবির ইমরান ঔদ্ধত্যতার সাথে নবজাতক বাচ্চার মৃতুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাচ্চা হওয়ার পরপরই অবস্থা আশংকজনক হলে আমরা শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করি। সেখানে গেলে বাচ্চাটি মারা যায়। রুগি সেবা নিলে টাকা তো দিতেই হবে।
তিনি কিভাবে পরিশোধ করবে তা তাদের ব্যপার। আর রুগিকে আটকে রাখার বিষয়টি সত্য নয়। মোবাইল ফোন আটকে রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, আমি একটি নম্বর নেওয়ার জন্য মোবাইলটি নিয়েছি কিছুক্ষণ পর দিব। স্থানীয়রা জানান,এই ডায়গনিষ্টিকে সেবা নিতে এলে রুগিদের নিঃস্ব হয়ে ফিরতে হয়। এই ডায়গনিস্টিক সেন্টারের মালিক ডাক্তার হুমায়ন কবির ইমরান সুখানপুকুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ।
ওখানে যারা সেবা নিতে গেলে তার ক্লিনিকে বিভিন্ন ধরনের টেষ্ট করতে তাদেরকে বাধ্য করে।প্রসুতির অপারেশন করা ডাক্তার শরিফুল ইসলাম শাতিলের নিকট উক্ত রুগির ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, কি বিষয় ভাই আমি তো ভাই কিছুই জানিনা। এ ব্যপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শারমিন কবিরাজকে জানালে তিনি বলেন, আমার হেড এ্যাসিস্টেন্ট ওখানে কথা বলে ব্যপারটা দেখতেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাবেয়া আসফার সায়মা বলেন, আমি এ ব্যপারে কিছু জানিনা। তবে খোঁজ নিয়ে গুরুত্বের সাথে বিষয়টা দেখছি এবং সমাধানের চেষ্টা করবো।