এনামুল হক রাশেদী, বাঁশখালী চট্টগ্রাম থেকেঃ
চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলা গন্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা ৫ নং ওয়ার্ডের মোস্তাফিজুর রহমান ঘর থেকে এক যুবতী গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত যুবতী গৃহবধুর নাম শামিমুল জান্নাত (২১) সে স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম বড়ঘোনা মনসুর আলীর বাড়ির মোস্তাফিজুর রহমানের কন্যা এবং গন্ডামারা ২ নং ওয়ার্ডের নন্না মিয়ার পূত্র ইকবাল হোসেনের স্ত্রী।
২২ জুলাই’২৩ ইং শনিবার সকালে শামীমুল জান্নাতের লাশ তার বাবার বাড়ী থেকে উদ্ধার করা হয়। এসময় রাতে শামিমুল জান্নাতের সাথে একসাথে রাত্রি যাপন করা তার স্বামি ইকবাল সুকৌশলে পালিয়ে যায়। শামিমুল জান্নাতের নিহত হওয়ার পিছনে কি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে চলছে বেশ জল্পনা কল্পনা।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশঃ গত বছরের ২২শে আগস্ট একই ইউনিয়নের গন্ডামারা দুই নম্বর ওয়ার্ডের আবুল হোসেন প্রকাশঃ নন্না মিয়ার পুত্র মো: ইকবালের (২৫) সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা ।সংসার জীবনের এক বছরের মাথায় স্বামী-স্ত্রীর মনোমালিন্য অজুহাত দেখিয়ে শামিমুল জান্নাত কে ২৮ শে জুন ২৩ ইংরেজি তালাক প্রদান করেন তার স্বামী ইকবাল হোসেন।
নিহতের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তিনি পার্শ্ববর্তি পাওয়ার প্ল্যান্টে নাইট ডিউটিতে ছিলেন, রাতে ঘর থেকে জানানো হয় জামাই এসেছে, তিনি সকালে বাজার নিয়ে বাড়িতে আসার কথা, এমন সময় ঘর থেকে তাড়াতাড়ি বাড়িতে আসার জন্য তাগাদা দেওয়া হলে তিনি বাড়িতে এসে দেখেন তার কন্যা পড়ে আছে মাটিতে।
শুক্রবার ২১ জুলাই রাত ১১ টার সময় মোহাম্মদ ইকবাল (মেয়ের জামাতা) তাদের ঘরে আসেন। কিজন্য এসেছেন জানতে চাইলে ইকবাল বলেন, সে রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ভুল করেছে,তালাক প্রত্যাহার করে নিয়ে প্রয়োজনে হুজুর ডেকে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে। এমন কথার ভিত্তিতে সকাল হলে মেম্বার ও সমাজের মান্যগন্য ব্যক্তিদের ডেকে ফায়সালা করার চিন্তা মাথায় রেখে তারা জামাতা ইকবালকে আলাদা ঘরে রাত্রি যাপন করতে দিলেও পরক্ষনে সেই মেয়েকে তার রুমে ডেকে নিয়ে যায়। সকালে নিহতের মা নামাজ পড়তে উঠে দেখি ইকবাল দৌঁড়ে পালিয়ে চলে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় মেয়ের রুমে গিয়ে দেখে সে মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তিনি প্রশাসনের কাছে মেয়ে হত্যার বিচার দাবি করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল হোসেন সিকদার আবু বলেন, শামিমুল জান্নাত ও ইকবাল হোসেনের বিবাহ বিচ্ছেদ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বিচার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে শামীমুল জান্নাতের পরিবারের পক্ষ থেকে রাতেই আমাকে মোবাইল ফোনে জানানো হয়, নিহত যুবতীর স্বামী ইকবাল হোসেন তাদের ঘরে এসেছেন। ওই সংবাদ তাৎক্ষণিক ভাবে ছেলের ওয়ার্ডের মেম্বার কে জানানো হয়। রাত পেরুলেই পরদিন এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিব এমন আশ্বস্ত করেছিলাম তাদেরকে।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল উদ্দিন (পিপিএম) জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ারা (সার্কেল) মো. কামরুল হাসান স্যার সহ আমরা একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক নিহতের লাশ উদ্ধার করে বেলা ১২ টায় ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা তার সঠিক কারণ এখনো বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তে মৃত্যুর আসল কারণ বেরিয়ে আসবে। তবে হত্যা করা হলে মার্ডার মামলা হিসেবে গণ্য করা হবে। ওই যুবতীর মায়ের বরাতে বলেন,নিহত যুবতীর বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও তাদের মধ্যে একে অপরের সাথে ফোনে যোগাযোগ ছিল,সেই সুবাদে তাদের ঘরে এসেছেন নিহতের স্বামী ইকবাল হোসেন।
উল্লেখ্যঃ শামিমুল জান্নাতের নিহত হওয়ার ঘটনাটি সকাল থেকে এলাকায় স্বামি ইকবাল তার স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে প্রচার হয়ে পড়ে। এদিকে ঘটনার পর থেকে স্বামি ইকবালও পলাতক রয়েছে।