মোঃ রিয়াজুল সোহাগ, নোয়াখালী থেকেঃ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মেঘনা নদী ভাঙনরোধে ‘ভূমি পুনরুদ্ধারে একনেকের সভায় ৫৮৮ কোটি টাকার উড়িরচর নোয়াখালী ক্রস ড্যাম নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আনন্দ মিছিল করেছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নে এ প্রকল্প পাশ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানায় স্থানীয়রা। এ ছাড়া স্থানীয়রা আনন্দ শোভাযাত্রা ও মিষ্টি বিতরণ করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সময় ভূমি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে একনেকের সভায় ৫৮৮ কোটি টাকার ‘উড়িরচর নোয়াখালী ক্রস ড্যাম নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা।
স্থানীয়রা বলেন, মেঘনা নদীর ভাঙনে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী, চর ফকিরা ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ বসতভিটা হারিয়েছেন। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ভূমি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে উড়িরচর নোয়াখালী ক্রস ড্যাম নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নদী ভাঙনরোধের পাশাপাশি উদ্ধার হবে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর কৃষি জমি। সন্ধ্যায় এ প্রকল্প পাস হওয়ার খবর কোম্পানীগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন সাধারণ মানুষ।
জেলে নুরনবীর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা বারবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছি। এ সংবাদে এখন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
চর এলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সর্বনাশা নদী আমাদের শেষ করে ফেলেছে। আজ আমরা কত খুশি হয়েছি তা বলে বুঝাতে পারবো না। সেই খুশীতে আমরা সবার মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গর্ব, ওবায়দুল কাদের স্যার ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাদের মির্জাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, কোম্পানীগঞ্জের সন্তান সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির একান্ত প্রচেষ্টায় নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার ক্রসড্যাম নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদ হয়েছে। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদের প্রতি। আজ আমাদের আনন্দের শেষ নাই। দীর্ঘদিন পর নদী ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের স্বপ্নের দাবি পূরণ হয়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সী আমির ফয়সাল বলেন, এই প্রকল্পের ফলে নদী ভাঙনরোধ হবে, নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি উদ্ধার হবে। উড়িরচরের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ফলে উড়িরচরের জীবন যাত্রার মানউন্নয়ন হবে। পানিসম্পদ মন্ত্রীর নির্দেশে খুব দ্রুত দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে নদী ভাঙনরোধে কাজ করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।