বিকাশ চন্দ্র স্বর্নকার, বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার সোনাতলায় হরিবাসর উপলক্ষে তৈরিকৃত গেইট ভাংচুর,গেইটের কাপড় কাঁটা সহ অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জরিত ২জনকে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ। পরে ওই ঘটনায় মন্দির কমিটির সভাপতি জুধীষ্টি চন্দ্র সরকার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
গ্ৰেফতারকৃতরা হলেন উপজেলার পশ্চিম তেকানী করমজা গ্ৰামের আজিজুল মন্ডলের ছেলে মোঃ রাহিম মন্ডল ও শহিদুল ইসলাম খন্দকারের ছেলে মোঃ বিপ্লব হোসেন খন্দকার। স্থানীয় ও মামলা সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিম তেকানী করমজা হিন্দু পাড়ায় গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও ২৪প্রহর ব্যাপী নীলা ও নাম কীর্তন অনুষ্ঠিত হবে।
সে উপলক্ষে গ্ৰামের প্রবেশের মুখে ২রা জুন ডেকোরেটর কর্তৃক বাঁশ ও কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় গেইট। কিন্তু ওই দিন রাতে কে বা কাহারা গেইটটি ভেঙ্গে ফেলে। পরের দিন গেইটটি পুনঃ নির্মাণ করলে আবারো ৭ই জুন গভীর রাতে ওই গেইটটির কাপড় কেটে ফেলা হয়।
বিষয়টি নিয়ে থানায় অজ্ঞাত নাম দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী জুধিষ্টী সরকার। এ সময়ে থানার ওসির নির্দেশ অনুযায়ী ওই রাতে থেকেই তারা পুরো গ্ৰাম পাহাড়ার ব্যবস্থা করেন ।
এদিকে প্রতি রাতে পাহাড়া চলমান অবস্থায় গত ১২ই জুন সোমবার দিবাগত রাতে পাহাড়া কালীন সময়ে শ্রী হৃদয় চন্দ্র সরকার,শ্রী প্রিয়তোষ চন্দ্র সরকার ও সীমান্ত চন্দ্র সরকার গেইটে আগুন দেখতে পেয়ে টর্চ লাইট এর আলো ধরলে রাহিম মন্ডল ও বিপ্লব খন্দকার গেইটে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখতে পায়। মুহুর্তে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাহিম মন্ডল ও বিপ্লব খন্দকার গা ঢাকা দেয়। বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশে ফোন করে মন্দির কমিটির সদস্যরা।
এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে স্থানীয়দের কাছে সবকিছু জেনে ব্যপক অভিযান পরিচালনা করে রাহিম ও বিপ্লব কে গ্ৰেফতার করে থানায় আনে। এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সভাপতি জুধীষ্টি চন্দ্র সরকার বলেন,হরিবাসর উপলক্ষে নির্মিত গেইট শুরু থেকেই এরা কাপড় কাটা ভাংচুর করা সহ অগ্নিসংযোগ করে আসছে। আমাদের ছেলেরা রাতে বিউটি কালীন সময়ে স্বচোখে দেখে এবং বিষয়টি নিয়ে ওদের পরিবারকে জানালেও পরিবার উল্টো আমাদেরকে হুমকি দেয়।
শৈলেন চন্দ্র সরকার বলেন, গেইটটি পর পর তিন বার ক্ষতি সাধন করায় আমরা এলাকাবাসী চরম আতঙ্কের মধ্যে আছি। উপজেলা পুজা পরিষদের সভাপতি অসিম কুমার জৈন বলেন,গত সোমবার গভীর রাতের ঘটনা আমি জানতে পেরে ওই গ্ৰামে যায় কিন্তু অন্যায়কারী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা না পেয়ে নিরোপায় হয়ে থানায় ফোন করি। মানবাধিকার কর্মী বিকাশ চন্দ্র স্বর্নকার বলেন, কিছু মানুষ ধর্মান্ধ হয়ে পড়েছে,এরই ধারাবাহিকতায় এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে ২ জন যুবক।
তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। পুলিশের উপপরিদর্শক মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, রাতে ফোনে বিষয়টি জানতে পেরে ওসি স্যারের নির্দেশে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করি তবে জনগণের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনা ঘটিয়েছে মর্মে স্বীকার করে।
থানার অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসান বলেন, ঘটনার সাথে জরিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং আদালতে মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।