এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম থেকে:
চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ডলি আক্তার পরপর দুই বছর অন্তঃসত্বা হওয়ার অপরাধে তাকে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগ উঠেছে। কর্তৃপক্ষ মধ্যরাতে তার আট মাস বয়সী শিশুসহ কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম ইম্পেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইন্সটিটিউটটি নগরীর খুলশীস্থ অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হসপিটালের প্রতিষ্ঠান। এ ঘটনায় সমালোচনা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়।
ডলি আক্তারের অভিযোগ, কোন কারণ না দেখিয়ে এক দিনের নোটিশে নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
৯ অক্টোবর ইম্পেরিয়াল হসপিটালের মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মো. আরিফুর রহমান নোটিশে স্বাক্ষরিত নোটিশে ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ ডলিকে চাকুরিচ্যুত করার কোন কারন উল্লেখ করা হয়নি বলে জানা যায়।
এদিকে নার্সিং ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ নিয়োগ ও অপসারনে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ নিয়োগ কমিটির অনুমোদন নেয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ডলি আক্তারের অভিযোগ, কোন কারণ না দেখিয়ে এক দিনের নোটিশে নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, যা কোন অবস্থাতেই নিয়মতান্ত্রিক নয়। কোন বিধি না মেনে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ডলি আক্তারের। ইম্পেরিয়াল হসপিটাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে অধ্যক্ষ ডলিকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় নোটিশে।
চাকরিচ্যুত অধ্যক্ষ ডলি আক্তার বলেন, পরপর দুই বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়াই অপরাধ, এই অপরাধে কোনো কারণ না দেখিয়ে মধ্যরাতে আমাকে চাকরিচ্যুত করে হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর একটি হোটেলে রেখে আসে অ্যাপোলো ইমপেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, গত বছর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি পেয়েছিলাম। এরপর অসুস্থতার কারণে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইম্পেরিয়াল হসপিটালের প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডা. দিল আনজিজের কাছে যাই। সেখানে চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা করে পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হই। এ অবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করতে থাকে এবং মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলতে থাকে ‘আপনি গত বছরও চার মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি নিয়েছিলেন এবং এই বছরও আবার ছুটি নেবেন, তাই আপনি পদত্যাগপত্র দিয়ে বিদায় নিয়ে নিন।
তিনি আরও বলেন, আমি পদত্যাগ না করায় ৯ অক্টোবর সকালে কর্তৃপক্ষ মানব সম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তৎক্ষণাৎ পদত্যাগপত্র দিতে বলে, অন্যথায় টার্মিনেট করা হবে বলে জানায়। এরপর আমি পদত্যাগ করব না জানালে তখন একটি ফটোকপি চাকরিচ্যুতির নোটিশ দেয় ও তৎক্ষণাৎ কলেজ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র কলেজ সেক্রেটারির কাছে বুঝিয়ে দিয়ে কলেজ হোস্টেল ছেড়ে দেয়ার জন্য বলে। অন্তঃসত্বা হওয়াটাতো অপরাধ বা অবৈধ নয়, এই অজুহাতে একটি প্রতিষ্ঠানের একজন অধ্যক্ষকে এভাবে চাকুরিচ্যুত করা কতটুকু নিয়মতান্ত্রিক ও মানবিক তা বিবেচনার দায়িত্ব আমি সুশীল সমাজের কাছেই রাখলাম।