এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম থেকে:
নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি ঘাতক স্বামী ইয়াছিন মাহমুদ (৩৫) প্রকাশঃ বেলাল’কে চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম। গ্রেফতারকৃত আসামি ইয়াছিন মাহমুদ প্রকাশঃ বেলাল (৩৫) নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার বয়ারচর আলি বাজার গ্রামের আবুল বাশার প্রকাশঃ আবুল কালামের ছেলে।
২৯ জানুয়ারি’২০২৪ ইং সোমবার নির্ভরযোগ্য গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের র্যাব-৭ ও ঢাকার র্যাব-২-এর যৌথ আভিযানিক একটি টিম চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন পশ্চিম গোসাইল ডাঙ্গা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দির্ঘদিন ধরে পলাতক আসামী ইয়াছিন মাহমুদকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব-৭ এর মিডিয়া সূত্র।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশঃ ২০২০ সালের ২৬ জুন তারিখে আসামী ইয়াছিনের সাথে নিহত ভিকটিম সুমী আকতারের ইসলামি শরীয়া মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানও জন্মগ্রহণ করে। স্বামী ইয়াছিন মাহমুদ ব্যবসার জন্য ভিকটিমের পরিবারের নিকট ০১ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করলে ভিকটিমের সুখের কথা বিবেচনা করে নিহত সুমীর পরিবার স্বামি ইয়াছিনের দাবিকৃত টাকা প্রদান করে। পরবর্তীতে ইয়াছিন তার স্ত্রীর নিকট আরো ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করলে ভিকটিম টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে গত ০৩ জুলাই ২০২২ ইং তারিখ পাষন্ড স্বামী ইয়াছিন ক্ষিপ্ত হয়ে ৬ মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রী’কে এলোপাতারি মারপিট করতে থাকে একপর্যায়ে ভিকটিমের তলপেটে লাথি দিলে ঘটনাস্থলে ভিকটিম মৃত্যুবরণ করে।
উক্ত নৃশংস হত্যার ঘটনায় নিহত ভিকটিমের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদি হয়ে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানায় ০৫ জন’কে আসামি করে একটি হত্যা মামলার দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৫/৯০, তারিখ-৩০ জুলাই ২০২২ ইং ধারাঃ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/০৩) এর ১১(ক)/৩০।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইয়াছিন আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মবেশে চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানাধীন পশ্চিম গোসাইল ডাঙ্গা এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র্যাব-২, ঢাকা এর যৌথ আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি ইয়াছিন মাহমুদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে সে বর্ণিত হত্যা মামলার এজাহার নামীয় প্রধান পলাতক আসামি এবং নিহত ভিকটিমের স্বামী মর্মে স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, সে আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে ছদ্মনামে আত্মগোপন করে ছিল। গ্রেফতারকৃত আসামি ইয়াছিনকে পরবর্তি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব-৭ চট্টগ্রাম।