এনামুল হক রাশেদী, বাঁশখালী উপজেলা প্রতিনিধি-(চট্টগ্রাম)
চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করনে ভূক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে এবার স্বাস্থ্যখাতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করে দুই পল্লী চিকিৎসককে অর্থদন্ড সহ কারাদন্ড প্রদান করেছে।
১৩ এপ্রিল’২৩ ইং বৃহস্পতিবার দুপুর ০৩.০০ টা হতে বিকেল ০৫.০০ পর্যন্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে উপজেলার সরল ইউনিয়নের মিনজিরিতলা ও হারুন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
এই সময় মিনজিরিতলা গ্রামের জনৈক কুলসুমা খাতুনের টিউমার অপারেশনের ফলে তার অঙ্গহানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে পল্লী চিকিৎসক জমির উদ্দিনের চেম্বারে অভিযান চালিয়ে তার ব্যাগে সংরক্ষিত অপরাশেনের বিভিন্ন সরঞ্জাম, জীবন রক্ষাকারী ঔষধ পাওয়া যায়। স্বীকারোক্তিতে পল্লী চিকিৎসক জমির উদ্দিন ১৮ বছর ধরে শিশুদের খৎনা, ডেলিভারী রোগীর সিজার সহ,বিভিন্ন অপরাশেন পরিচালনা করার কথা স্বিকার করেন।
সার্বিক বিবেচনায় পল্লী চিকিৎসক জমির উদ্দিন কে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৫৩ ধারায় ০৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সময় হারুন বাজারে পল্লী চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন সুমনের চেম্বারে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ ও বেআইনীভাবে বিভিন্ন অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনার সরঞ্জামাদী পাওয়া গেলে জেরার মুখে সেও দীর্ঘ ২২ বছর অবৈধভাবে অপারেশন কার্যক্রম পরিচালনার কথা স্বিকার করে।
অবৈধ ও বেআইনীভাবে মানুষের শরীরে অস্ত্রপচারের ফলে পল্লী চিকিৎসক শাহাদত হোসেন সুমনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫,০০০/- টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযান পরিচালনায় সহযোগিতা করেন, ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারী ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, সরকারী আইন লঙ্ঘন করে যেখানে যে বা যারা বেআইনী কার্যক্রম পরিচালনা করবে, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। আজকে উপজেলার সরল ও মিনজিরতলায় ভূক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করে বেআইনীভাবে মানুষের শরীরে অস্ত্রপচারের অপরাধে সুনিদ্দৃষ্ঠ আইনে দুইজন পল্লী চিকিৎসককে জরিমানা সহ বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে উপজেলা প্রশাসনের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্যঃ বাঁশখালীতে এসি ল্যান্ডের নেতৃত্বে প্রায় প্রতিদিন রাতে বিভিন্ন অভিযোগকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করে সামাজিক অপরাধীদের মনে আতংক সৃষ্ঠি হয়েছে। নিয়মিত অভিযানের ফলে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা, আবাদী জমির টপ সয়েল কাটা, পাহাড়ী ছড়া থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন, হাট বাজারে জনচলাচলের রাস্তা দখল করে ব্যবসা পরিচালনা, বেআইনীভাবে ব্যবসা পরিচালনা, হোটেল রেস্তোঁরায় নোংরা পরিবেশ ও পঁচা বাসি খাবার পরিবেশন, নদী দখল, সরকারী খাস জমি দখল, মদ জুয়ার দৌরাত্য অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমান আদালতের এ অভিযান সুশীল সমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের কাঁছেও বেশ প্রশংসিত হচ্ছে।