প্রমিথিউসের বিপ্লব এখন নিউইয়র্কের ট্যাক্সি চালক, বললেন— “চুরি তো করছি না!”
ছবিঃ প্রথম আলো থেকে সংগৃহীত (গায়কের পক্ষ থেকে)
নিউইয়র্ক | মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশের জনপ্রিয় রক ব্যান্ড প্রমিথিউসের ভোকাল বিপ্লব এখন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ট্যাক্সি চালান। নব্বই দশকের রক মিউজিক আইকন হিসেবে যিনি স্টেজ মাতাতেন, আজ তিনি ব্যস্ত এক ভিন্ন জীবনে। তবে এ নিয়ে তিনি মোটেও লজ্জিত নন বরং মনে করেন, এটি তার জীবনের নতুন অধ্যায়।
বিপ্লব বললেন— “আমি সংকোচ বোধ করি না”
একান্ত আলাপচারিতায় বিপ্লব বলেন, “আমি ট্যাক্সি চালাই, এতে সংকোচের কিছু নেই। আমি তো চুরি করছি না! আমি মানুষের সেবা দিচ্ছি, বিনিময়ে উপার্জন করছি।”
তিনি জানান, নিউইয়র্কে এসে প্রথমে আমেরিকান এয়ারলাইনসে চাকরি নেন, পরে নিজে গাড়ি কিনে ট্যাক্সি চালানো শুরু করেন। তবে সংগীতের প্রতি ভালোবাসা কমেনি।
“আমার অস্তিত্বে গান”— নতুন গান তৈরির কাজ চলছে
বিপ্লব জানিয়েছেন, নতুন গান লিখছেন ও সুর তৈরি করছেন।
ইতিমধ্যে বেশ কিছু নতুন গিটার কিনেছেন।
ছোট ছেলে অ্যারনকে গিটার শেখাচ্ছেন।
নিজের ইউটিউব চ্যানেল চালু করার পরিকল্পনা করছেন।
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে ব্যান্ডের সবার সঙ্গে আবার মঞ্চে ফিরতে চান।
কেন দেশ ছাড়লেন?
দেশে দারুণ জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও কেন যুক্তরাষ্ট্রে চলে এলেন? উত্তরে তিনি বলেন,
“সৃষ্টিকর্তা জীবনের এই সময়টা এখানেই লিখে রেখেছিলেন, তাই আসতে হয়েছে।”
তিনি মনে করেন, জীবন বদলে গেলেও মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হয়। হতাশাকে প্রশ্রয় না দিয়ে নতুন বাস্তবতাকে মেনে নিয়েছেন।
কেন ট্যাক্সি চালান?
স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়, কোনো খবরদারি নেই।
নিউইয়র্কে স্মার্ট চাকরির জন্য স্থানীয় পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা লাগে।
সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
“আমি ব্যর্থ হতাশ হয়ে গেলে শেষ হয়ে যেতাম। তাই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।”
বিপ্লব ও প্রমিথিউস: এক কিংবদন্তি যাত্রা
বিপ্লব বাংলাদেশের সংগীত জগতে এক পরিচিত নাম।
১৯৮৬ সালে প্রমিথিউস ব্যান্ড গঠন।
১৯৮৮ সালে প্রথম অ্যালবাম “স্বাধীনতা চাই” প্রকাশ।
মোট ১৬টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে।
সর্বশেষ অ্যালবাম: “আমাদের পথ” ও “ছায়াপথ”।
নতুন জীবনের নতুন অধ্যায়
বিপ্লব বলেন,
“জীবনের প্রতিটি পরিবর্তন মেনে নিতে হয়। আমি সময়টাকে উপভোগ করছি।”
নিউইয়র্কে থেকেও তিনি সংগীতের সাথে যুক্ত আছেন এবং আবারও মঞ্চে ফেরার পরিকল্পনা করছেন।
নব্বইয়ের রকস্টার এখন ট্যাক্সি চালান, তবে স্বপ্ন আর সংগীত তাকে এখনো ছেড়ে যায়নি!