বিকাশ চন্দ্র স্বর্নকার, বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থানগড় শীলাদেবীর ঘাটে অনুষ্ঠিত হলো হিন্দুধর্মাম্বলীদের বৃহৎতম জৈষ্ঠ্যের দশমী মেলা। স্থানীয়রা জানালেন, শীলাদেবী ছিলেন, মহাস্থানগড়ের শেষ হিন্দু রাজা পশুরামের বোন বা (ভগ্নি)। মুসলিম সাধক হযরত শাহ সুলতান বলখী (রহঃ) মাহীসওয়ার কর্তৃক তৎকালীন হিন্দু রাজ্যের রাজা পরশুরাম যুদ্ধে পরাজিত হবার পর শীলাদেবী আত্মরক্ষায় পার্শ্ববর্তী করতোয়া নদীর এই স্থানে জলে ঝাঁপ দিয়ে ডুবে আত্মহুতি দেন।
এরপর থেকে স্থানীয় হিন্দুধর্মাম্বলীরা এই স্থানে প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা দশমীতে এবং ১২ বছর পরপর পৌষ-নারায়ণী স্নানের উদ্দেশ্যে এই স্থানে মেলা করতে সমাবেত হয়। শুধু স্থানীয়রা নয় দেশের বাইরের অনেকেই এই স্নান উৎসবে অংশ নিতে করতোয়া তীরে চলে আসেন। অন্য এক জনস্রুতি মতে, স্থানটি এক সময় নৌপথে আমদানি করা পাথর খালাস ও স্তুপীকৃত করে রাখার জন্যে ব্যবহৃত হতো বলে কালক্রমে এর নাম হয় “শিলা দ্বীপ” এবং যার বিকৃতরূপ সম্ভবত “শীলাদেবী” এবং “শীলাদেবীর ঘাট” নামে প্রচলিত হয়।
পৃথিবীতে যত প্রাচীন ও আদিসভ্য নগরী আছে তার মধ্যে বগুড়ার মহাস্থানগড় অন্যতম। আর এই মহাস্থানগড়েই মিলে বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো জনবসতির ধ্বংসাবশেষ। মঙ্গলবার দুপুরে মহাস্থানগড় শীলাদেবী ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ মেলায় এসেছেন হিন্দুধর্মাম্বলী নারী ও পুরুষেরা। পূর্ণ্যার্থীরা শীলাদেবী মহাশ্মশান ঘাটে করতোয়া নদীতে পুজা পর্ব শেষে নদীতে স্নান করে থাকেন।
অনেকেই তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পরিবার পরিজনদের নিয়ে মহাস্থান জাদুঘর এলাকার ছায়া সুনিবিড় স্থানে বসে চিড়া- দই খাচ্ছেন। এ মেলা উপলক্ষে বসেছে হরেক রকম পণ্যের দোকানপাট। জৈষ্ঠ্যের মৌসুমি ফলসহ ১ দিনের এ মেলায় ওঠেছে আকাশে উড়ানো ঘুড়ি, চং, গুড্রি,প্যাঁচা, চিল, বকদুল। মেলায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় শিবগঞ্জ থানা পুলিশ টহলে নিয়োজিত ছিল।