রনজিত কুমার পাল (বাবু), স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানী ঢাকার অদূরে ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বাইশাকান্দা ইউনিয়নের খাগাইল গ্রামে সাধক পূরুষ অমৃত লাল ভক্তের ১৭৫তম বার্ষিক সপ্তাহ ব্যাপী নামযজ্ঞ, অষ্টকালীন লীলাকীর্তন উৎসব ঐতিহ্যাবাহী গ্রামীণ মেলা চলছে।
গত ১১ নভেম্বর দেশ ও জাতির মঙ্গলার্থে শ্রীমদ্ভাগবত পাঠের মধ্য দিয়ে মহামানব“অমৃত ভক্তের”১৭৫ তম উৎসব শুরু হয়। প্রার্থনায় ব্রতী হয়েছে আগত লাখো ভক্তবৃন্দ।
কথিত রয়েছে আগত ভক্তরা নানা রোগ নিরাময় ও শান্তির প্রত্যাশায় অমৃতলাল ভক্তের এই বৃহৎ পুকুরে স্নান কার্য় সম্পন্ন করে থাকে মুক্তি পাবার আশায়।
মেলায় আগত ভক্ত শ্রী পবন চৌধুরী বলেন অমৃত ভক্তের পুকুর পারে রাধা কৃঞ্চের নৌকা বিলাশ দেখতে এসেছি। প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলাম সবাই যেন মিলেমিশে সাবস্থান করতে পারি সকলেই যেনো ভালো থাকতে পারি।
ঢাকা থেকে উৎসবে এসেছেন তমা মজুমদার। তিনি বলেন অমৃত ভক্তের এই পুকুরে যে মনো বাসনা করেন তার সকল মনো বাসনা পুর্ন করেন অমৃত ভক্ত।তাই তিনি ধামরাইয়ের খাগাইল অমৃত ভক্তের উৎসবে এসেছেন মনোবাসনা পুর্ন লাভে।
ভক্ত আনন্দ সরকার তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভক্তের উৎসবে এসেছেন তিনি নিজের মনো বাসনা পর্ন লাভ ও দেশ ও জাতির শন্তি উন্নয়ন কামনা করেন।
ঢাকার অদুরে ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের খাগাইল অমৃত ভক্তের পুকুর পার এখন এক তীর্থ স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৭৫ বছর পূর্বে সাধক পূুরুষ অমৃত লাল ভক্ত মূূলতঃ ধর্মীয় চেতনায় সপ্তাহ ব্যাপী এই উৎসব ও তার মেলার গোড়া পত্তন করেছিলেন। কালের বির্বতনে আজ সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতিতে এই উৎসব হয়ে উঠেছে সার্বজনীন ।অমৃত ভক্ত নেই কিন্ত তার স্মৃতি মনের মাঝে আছে।
সংকীর্তন ও শ্রীশ্রী রাধাকৃঞ্চের অষ্টকালীন লীলা কীর্ত্তন পরিবেশন করেছেন ফরিদপুরের অমল ব্যার্ণাজী,নাটোরের পুষ্প রানী দাসী ও উত্তম সাহা,ও ধামরাইয়ের ভজহরি ভৌমিক। এছাড়াও দেশের প্রখ্যাত ছয়টি হরিনাম সংকীর্ত্তনের দল অংশ নেন এই উৎসবে।
সপ্তাহব্যাপী এ উৎসবে আগত ভক্তবৃন্দের জন্য শত মন চাল-ডাল রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতি দিন আগতদের মাঝে প্রসাদ বিতরন করা হয়েছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করে এখানে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয় উৎসবের এ কয় দিন।
গ্রামীন জনপদের এই উৎসব উপলক্ষে মেলাঙ্গন জুড়ে বিভিন্ন ধরনের দোকান ,স্টল,বেদীনিদের চুড়ি,বাঁশ-বেত,মাটির তেরী তৈজষপত্র,ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী তামা-কাঁসা শিল্পের ষ্টল সহ প্লাস্টিক,মেলামাইন,এ্যালমোনিয়ামের দোকান,বসেছে। পাশাপশি মিষ্টি সহ নানা ধরনের খাবারের দোকান। মেলায় সার্কাস দলের দুটি হাতি এসে আর্কষন আরো বাড়িয়ে দেয়। এই হাতি লোকালয়ে প্রবেশ করে দোকানে দোকানে অর্থ সংগ্রহ করে ও খাবার চেয়ে নেয়। পিছু নেয় শিশু কিশোরদের দল।
১১নভেম্বর শনিবার সকাল থেকে অনুষ্ঠিত হয় শ্রী মদ্ভাগবত ও গীতাপাঠ। চলে তিন দিন শনিবার, রবিবার ও সোমবার শ্রীমদ্ভাগবত পাঠান্তে ১৩ নভেম্বর ষোল প্রহরব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন এর শুভ অধিবাস অন্তে ১৪ ও ১৫ নভেম্বর হরিনাম সংকীর্তন উৎসব উদযাপন শেষে ১৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অষ্টকালীন লীলাকীর্তন শুরু হয়েছে চলবে দিবা-নিশি হয়ে ভোর সকাল পর্যন্ত।
আগামীকাল শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) মহাপ্রভুর ভোগরাগ নরনারায়ণ সেবা ও ধামরাইয়ের ঐতিহ্যবাহী মহাতীর্থ ভক্তের আঙ্গিনার পুকুরে নৌকা বিলাস অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রায় লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হবে।
সাধক পুরুষ অমৃত ভক্তের অঙ্গনেই প্রতিবছর সপ্তাহব্যাপী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অমৃতলাল ভক্তের আশ্রম ও এই বৃহৎ পুকুর পার ঘীরেই মূলতঃ সপ্তাহব্যাপী এই উৎসব। কথিত রয়েছে আগত ভক্তরা নানা রোগ নিরাময় ও শান্তির প্রত্যাশায় অমৃতলাল ভক্তের এই বৃহৎ পুকুরে স্নান কার্য় সম্পন্ন করে থাকে মুক্তি পাবার আশায়।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বাইশকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন নিজের এলাকায় বৃহৎ এ উৎসবে আগত সকল ভক্তবৃন্দকে শুভেচ্ছা জানান।
অজো পাড়া গ্রামে লাখো ভক্তের মিলন মেলায় আগতদের নিরাপত্তার জন্য তার পরিষদ সার্বক্ষনিক মেলাঙ্গনে কাজ করছে। আইন শৃংখলা পরিবেশ নিয়ন্ত্রনে রেখেছেন পুলিশ প্রশাসন। নির্বিঘ্নে সপ্তাহ ব্যাপী এ উৎসব শান্তি পৃর্ন ভাবে সম্পন্ন হচ্ছে, এজন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।