মোঃ রিয়াজুল সোহাগ, নোয়াখালী থেকেঃ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে স্বামী হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার বিবি কুলসুম (৩৭) উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য নরোত্তপুর গ্রামের ওয়াহেদ আলী সর্দার বাড়ির আবুল হোসেনের মেয়ে।
শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোর্পদ করা হয়। এর আগে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর উপজেলার নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, উপজেলার নরোত্তপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের মিজি বাড়ির দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শহীদ উল্যার সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় একই ওয়ার্ডের বিবি কুলসুমের। ১২ বছরের সংসারে তাদের তিন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। অন্ধ শহীদ বেকার হওয়ায় স্ত্রী কুলসুম সেলাই কাজ করে পরিবারের খরচ বহন করত।
সেলাই কাজ করে বীমা কোম্পানীতে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় করে। সংসারের সুখের আশায় ভিকটিম শহীদের পিতার ঘর মেরামত করার জন্য ওই টাকা দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ঘর মেরামত কাজে খরচ হওয়া টাকা ফেরত কিংবা কোন ধরনের সুরাহা না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়।
পুলিশ আরো জানায়, এছাড়া ভিকটিম শহিদ প্রায় সময় তার স্ত্রী সেলাই কাজ করতে গেলে বিদ্যুৎ বিলের অযুহাতে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিত। এসব বিষয় নিয়ে তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময় ঝগড়াঝাটি হতো। ২০১৮ সালে কুলসুমের পিতা ভিকটিম এবং আসামির মধ্যে ঝগড়াঝাটি বন্ধ করতে গেলে ভিকটিম শশুরের সামনে আসামি কুলসুম কে মা-বাবা নিয়ে গালাগালি ও মারধর করে। রাগান্বিত হয়ে কুলসুম তার অন্ধ স্বামী শহিদ উল্যাহকে গরম তেলের কড়াইয়ে ধাক্কা দিয়ে মা বাবা সহ অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যায়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শহীদ মৃত্যুবরণ করে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে কুলসুমসহ তার পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে চলে যায়। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। আদালত আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিবি কুলসুমকে মৃত্যুদন্ড এবং তার মা লিলি বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার সকালে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোর্পদ করা হয়।