বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার সোনাতলায় ধর্মকুল গ্রামের মাঠে রাতের আঁধারে বৃদ্ধ বর্গাচাষী হাফিজার রহমানের ৩৬ শতাংশ জমিতে বেড়ে ওঠা পাট কেটে ফেলেছে দুবৃর্ত্তরা। গত শনিবার রাতের কোনো এক সময় দুবৃর্ত্তরা পাটগুলো কেটে ফেলে। বিষয়টি জানার পর জমির মালিক পক্ষের মহসিন আলী বকুল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। বকুল ওই গ্রামের হাজি মোবারক আলীর ছেলে।
জানা যায়,উপজেলার বালুয়া ইউনিয়নের ধর্মকুল গ্রামের মৃত জয়েন উদ্দিন মন্ডলের ছেলে কৃষক হাফিজার রহমান মন্ডল (৬৫) একজন বর্গাচাষী।অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জমিতে যে ফসল হয় তার অর্ধেক নিজে নেন এবং বাকি অর্ধেক জমির মালিককে দেন।এভাবে তিনি ওই গ্রামের হাজি মোবারক আলীর ধর্মকুল মৌজার ১১২০ নং দাগের ৫১ শতাংশ জমি দির্ঘদিন যাবৎ বর্গাচাষ করে আসছেন।
এ বছরও আউস ধান কাটার পর ৩৬ শতাংশে পাট চাষ করেন। বর্তমানে পাটগুলো বেড়ে ৫/৬ ফুটের মতো উচুঁ হয়েছে। পাটগুলো বেড়ে ওঠা দেখে আশায় বুক বেধে ছিলেন বৃদ্ধ কৃষক হাফিজার রহমান। সেই উঠতি বয়সের পাটগুলো শত্রুতা করে কে বা কাহারা শনিবার দিবাগত রাতে কেটে ফেলেছে।
এ ব্যাপারে হাফিজার রহমান জানান,ছোটবেলা থেকে দরিদ্রতার মাঝে বড় হয়েছি। কাউকে তুই বলেও গালমন্দ করিনি। মনে করি আমার কোনো শত্রু নেই। কিন্তু আজ সেই ভাবনা আমাকে অনেক দূরে নিয়ে গেছে। সংসারে ছেলে-মেয়েদের মুখে দু’বেলা খাবার জোগাতে অন্যের জমি বর্গা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে আসছি। বড় আশা করে পাট চাষ করেছিলাম। আজ সেটিও তাদের সহ্য হলো না। জমির সমস্ত পাট শত্রুতা করে কেটে ফেলেছে। সমাজের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন,এ কেমন শত্রুতা? এ কেমন নিষ্ঠুরতা? আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে গ্রামবাসীরা জানান,একজনের সঙ্গে আরেকজনের শত্রুতা থাকতেই পারে, তবে ফসলের সঙ্গে কেন? যত বড় অপরাধীই হাফিজার রহমান হোক না কেন, তার ফসল কেটে ফেলা ঠিক হয়নি। যে তার ফসল কেটে ফেলেছে তারা বৃদ্ধ হাফিজারের পেটে লাথি মেরেছে। ফসল কাটার বিচার হওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে সোনাতলা থানা অফিসার ইনচার্জ সৈকত হাসান জানান, ঘটনার বিষয়ে থানায় অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।