শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া খুলনা থেকে:
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় ব্র্যাকের সামাজিক ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় অধিকার এখানে এখনই প্রকল্পের আয়োজনে সাহস নোয়াকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সামগ্রিক স্কুল ব্যবস্থার আঙ্গিকে অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অবহিতকরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ইয়ুথ সদস্য কথা দেবনাথ, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার টিকেন্দ্র নাথ সানা বক্তব্য দেন ডুমুরিয়া উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারি অশান্ত কুমার বারুই,মহুয়া খাতুন, মোঃ মহববত হোসেন,গাউসল আজম, মিস লাবনী খাতুন,আইরিন সুলচানা,সামি,মোঃ আল আমিন ইয়ালিক সরদার,মোঃ রসুল ফকির, মুন্নি খাতুন,মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সামগ্রিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাঃ সামগ্রিক বিদ্যালয় ব্যবস্থা হল এমন একটি মডেল যাতে পুরো স্কুল কমিউনিটি; যেমন-শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্কুলের কর্মচারী, স্কুল পরিচালনা কমিটি, অভিভাবক এবং বৃহত্তর সম্প্রদায় একত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ এবং উপযুক্ত শেখার পরিবেশ তৈরি করতে কাজ করে।
এই পদ্ধতির অনন্য দিক হল, এখানে কোন পৃথক পাঠ্যক্রম, মডিউল বা উপাদান তৈরি না করে শুধুমাত্র কারিকুলাম, পাঠ্যবই, শিক্ষক সহায়িকা, সরকারী গাইডলাইন এ দেয়া নির্দেশিকা বাস্তবায়ন করতে কাজ করবে এবং এর কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। এর সাথে সাথে কারিকুলামের আলোকে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ, সহায়ক বিভিন্ন সামগ্রী তৈরিতে কাজ করবে যাতে শিক্ষকরা আরও কার্যকরী প্রক্রিয়ায় শিক্ষাদান করতে পারে।
সংক্ষেপে বলা যায়, সামগ্রিক বিদ্যালয় ব্যবস্থার প্রধান লক্ষ্য হল বাংলাদেশের কারিকুলামের প্রেক্ষাপটে স্কুল পর্যায়ে এর যথাযথ বাস্তবায়ন এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরাপদ ও উপযোগী শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা।
নিরাপদ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় এভাবেঃস্কুলগুলিতে লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা, ধমক, হয়রানি ইত্যাদি কমাতে কার্যকর কমিটি থাকবে এবং সেই কমিটি যথাযথ পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করবে।
শিক্ষার্থীরা স্কুলে ধমক, সহিংসতা এবং হয়রানির অভিযোগ জানাতে পারবে। মাসিক বা ঋতুস্রাবের সময় শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করবে না। স্কুলগুলিতে প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী আছে এবং যেকোনো প্রয়োজনে স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ থাকবে।
শিক্ষার্থীরা স্থানীয় স্বাস্থ্য সুবিধা এবং/অথবা বয়ঃসন্ধিকালের স্বাস্থ্য কর্ণার সম্পর্কে জানবে।সামগ্রিক বিদ্যালয় ব্যবস্থা জন্য মাধ্যমিক অধিদপ্তর- এর সাথে বাস্তবায়নের ও উচ্চ শিক্ষা ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং সেই ক্লাসের জন্য কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত অধ্যায়গুলির উপর ফোকাস করব। এই অধ্যায়গুলির মাঝে আছে কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন, প্রতিদিনের যত্ন, পুষ্টি, খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, খেলাধুলা, প্রাথমিক চিকিৎসা, সুস্থ থাকার উপায়, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও এর যত্ন, মানসিক চাপ হ্রাস, শখ, ও বিনোদন ইত্যাদি।
এই বিষয়গুলি যদি যথাযথভাবে শেখা হয় তবে কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন সম্পর্কে উদ্বেগ, বিভ্রান্তি, ভয় ইত্যাদি দূর হবে, নিজেদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন করতে পারবে, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারবে, উন্নত যোগাযোেগ দক্ষতা তৈরি হবে।
আমাদের দেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতির কারণে এসব বিষয়ে অনেক সময় স্কুলের পরিবেশে বিস্তারিত আলোচনা করা কঠিন বলে মনে হয়। সামগ্রিক বিদ্যালয় ব্যবস্থার বাস্তবায়নের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের সার্বিক বিকাশের জন্য স্কুলের সাথে জড়িত সকলের সহযোগিতায় এমন পরিবেশ তৈরি হবে যাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বইটি যথাযথভাবে সরকারী দিকনির্দেশনা মেনে পড়ানো হয়।