বগুড়ায় বেড়েছে কুকুর আতংক, রেহাই পাচ্ছেনা পশুরাও
বগুড়া সোনাতলায় স্থানীয়দের মাঝে বেড়েছে কুকুরের আতংক। প্রায়ই কামড়ে দিচ্ছে পথচারী সহ পশুদেরকে।
এদিকে পৌর শহর সহ বিভিন্ন গ্ৰামে গিয়ে দেখা গেছে,দল বেঁধে কুকুরেরা ঘুরছে এদিক সেদিক। কুকুরেরা একে অপরের সাথে ঝগড়ায় পাশ দিয়ে পথচারী সহ স্থানীয়রা যাবার সময় কামড়ে দেয়। কুকুরের কামড়ে সে সময় লোকজন গ্ৰাম্য কবিরাজের শরণাপন্ন হয়। ফলে গ্ৰামের ওঝারা গুড় পড়া সহ বিভিন্ন দ্রব্য মিশানো ঔষধ দিয়ে থাকে।
তবে মানুষের হয়রানি ও ভোগান্তি চরম হারে বাড়লেও কুকুর নিধন বা নিয়ন্ত্রণে নেই কোনো সরকারি বা বেসরকারি ভাবে উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। এ কারণে একদিকে যেমন কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে বেওয়ারিশ এবং পাগলা কুকুরের কামড়ের শিকার হতে হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের তবে বাদ পরছেনা পশুরাও। হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে গড়ে প্রতিদিন গড়ে ১থেকে ২জন কুকুর কামরানো রুগী আসে এবং বিনামূল্যে সরকারি ভাবে টিকা তাদের মাঝে সরবরাহ করা হয় । যদিও এখন অনেকেই হাসপাতালে না গিয়ে স্থানীয় ঔষধ ফার্মেসি থেকে টিকা কিনে শরীরে পুশ করিয়ে নেয়।
এদিকে গত ক’দিন আগে পৌর এলাকার আকন্দ মার্কেটের সামনে দুজন শিশু ও গড়ফতেপুরে শিশু সহ তিন জনকে কামড়ে দেয় কুকুর। তবে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করেন ভুক্তভোগীরা। বড়িয়াহাটের সুশান্ত চন্দ্র কর্মকার উপজেলার কলেজ ষ্টেশন এলাকার লিটন প্রামানিক জানান,বাড়ি থেকে বেড় হলেই পথেঘাটে দল বেঁধে থাকে কুকুরেরা। তবে রাতে কুকুরের উপদ্রপ এত বেড়ে যায় একা বাড়িতে যাওয়াই মুশকিল।
সোনাতলার বিরেন্দ্রনাথ সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ দিলিপ কুমার রায় বলেন,আন্তর্জাতিক আইনে নিরীহ প্রাণি হত্যার বিষয়টি মানবতা পরিপন্থী হওয়ার কারণে বর্তমানে কুকুর নিধন নিষিদ্ধ রয়েছে।
এছাড়াও আইনের ধারা অনুযায়ী বেওয়ারিশ কুকুর সহ কোনো প্রাণিকে বিচার বহির্ভূত হত্যা করা যাবে না। তবে এরফলে দিন দিন বেড়েই চলছে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা। যদিও রাষ্ট্রের দায়িত্ব তার নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। তাই রাষ্ট্রকেই কুকুর নিয়ন্ত্রণে নতুন করে কিছু ভাবতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শারমিন কবিরাজ বলেন, কুকুরে কামড়ালে চিকিৎসা না নিলে জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়।এর প্রতিষেধক টিকা সিমিত পরিমাণে সরবরাহ আছে। তবে স্থানীয় সরকারের অধীনে সমাজসেবা অফিস মাধ্যমে চাহিদা অনুযায়ী টিকা বা ভ্যাকসিন রোগীদের দিয়ে থাকি।
এদিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন কুকুরে কামড়ালে রোগি কল্যাণ সমিতির মাধ্যমে গরিব অসহায়দের মাঝে টিকা ফ্রি দিয়ে থাকি। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নুসরাত জাহান লাকী বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের কারণে কুকুর নিধন করা যাবে না। তবে কুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণের বিষয়ে ভাবছে।