বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার সোনাতলায় গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে নদ-নদীতে পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেলেও আবার তা কমতে শুরু করেছে। এতে করে নদীকূলীয় ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়,২টি বাজার ও অসংখ্য বাড়িতে বন্যার পানি উঠেছে।
যমুনা নদীর তীরবর্তি চরাঞ্চলের কিছু এলাকার বাসিন্দাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার যমুনা ও বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আবার তা কমতে শুরু করেছে। বন্যার পানিতে নদীকুলীয় ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি বাজার এবং ২টি ইউনিয়নের প্রায় ৩ শতাধিক বাড়িঘরে বন্যার পানি উঠেছে। এতে করে ওই এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সল্প সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।
এদিকে হাটবাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে ব্যবসায়ীসহ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে পড়েছেন। সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইকার, পাকুল্লা, জোড়গাছা, মধুপুর ও সদর ইউনিয়নের প্রায় ১৮টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তেকানীচুকাইকার ও পাকুন্না ইউনিয়নের প্রায় ৪/৫শ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, ৯টি চরের প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পার্শ্ববর্তী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, মহেশপাড়া স্কুল এন্ড কলেজ, তেকানীচুকাইকার ও পাকুন্না এলাকার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও জোড়গাছা ইউনিয়নের হলিদাবগায় বাঙালী নদী এবং তেকানীচুকাইকার হার্টে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
অপরদিকে উপজেলার পূর্ব সুজাইতপুর, মির্জাপুর, রাধাকান্তপুর, আমতলী, পূর্বতেকানী, ভিকনের পাড়া, মহব্বতেরপাড়া, সরলিয়া, জন্ডিয়ারপাড়া, মহেশপাড়া আব্দুল মান্নান বালিকা বিদ্যালয় এবং কলেজ মাঠে বন্যার পানি উঠেছে। এদিকে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৪৫০ হেক্টর জমির ধান ঝড়-বৃষ্টি এবং বন্যার পানিতে তলিয়ে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে করে কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সোহরাব হোসেন বলেন, এবারের বন্যায় কৃষকের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির ধান নিমজ্জিত হয়েছে।
এ বিষয়ে বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে কোন ঝুঁকি নেই। সার্বক্ষনিক আমাদের লোকজন তদারকি করছে। এছাড়াও যে সকল এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত ছিল তা ইতিমধ্যেই মেরামত করা হয়েছে।