বিকাশ চন্দ্র স্বর্নকার, বগুড়া প্রতিনিধিঃ
বগুড়া সোনাতলায় কুকুরের আতংকে রয়েছে এলাকাবাসী তবে প্রায়ই কামড়ে দিচ্ছে পশুদেরকেও। এদিকে পৌর শহর সহ বিভিন্ন গ্ৰামে গিয়ে দেখা গেছে,দল বেঁধে কুকুরেরা ঘুরছে এদিক সেদিক। কুকুরেরা একে অপরের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হলে এ সময় শিশু সহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ পাশ দিয়ে যাবার কালে কামড়ে দিচ্ছে। ফলে গ্ৰাম্য কবিরাজের কাছে প্রতিদিনই বাড়ছে কুকুর কামড়ানো রোগীর ভিড়।
তবে মানুষের হয়রানি ও ভোগান্তি চরম হারে বাড়লেও কুকুর নিধনে বা নিয়ন্ত্রণে নেই কোনো সরকারি বা বেসরকারি ভাবে উদ্যোগ। প্রতিদিনই যেমন কুকুরের সংখ্যা বাড়ছে অন্যদিকে বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ের শিকার হতে হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধ সব বয়সী মানুষের তবে বাদ পরছেনা পশুরাও। ফলে কুকুরে কামড়ানো রোগীদের উপজেলা হাসপাতালে এলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যতটুকু সম্ভব ভ্যাকসিন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অফিস থেকে সংগ্রহ করে রুগীদের মাঝে সরবরাহ করে থাকেন।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে গড়ে প্রতিদিন গড়ে ১থেকে ২জন কুকুর কামরানো রুগী আসে এবং বিনামূল্যে সরকারি ভাবে টিকা তাদের মাঝে সরবরাহ করা হয়।
এদিকে অনেকেই হাসপাতালে না গিয়ে বিভিন্ন ঔষধ ফার্মেসি থেকে টিকা কিনে গ্ৰাম্য ডাক্তার দিয়ে তা শরীরে পুশ করিয়ে নেয়। উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের ধীরেন্দ্রনাথ,কলেজ ষ্টেশন এলাকার লিটন প্রামানিক জানান,প্রতিদিন হেটে বাড়ি থেকে বাজার আসা যাওয়া করি কিন্তু পথে দল বেঁধে থাকে কুকুরেরা। তবে কুকুরের কামড়ানোর ভয়ে রাতে একা একা বাড়িতে যাওয়াই মুশকিল। এদের সবার আতঙ্কের কারণই হচ্ছে বেওয়ারিশ কুকুর।
বড়িয়াহাটের সুশান্ত চন্দ্র কর্মকার বলেন, আমি ব্যবসার কাজে প্রতিদিন বাড়ি থেকে বাজারে যাতায়াত করি। রাতের বেলা কিছু জায়গায় মোটরসাইকেল এর আলো দেখলে কুকুরের দল ছুটে আসে কামড়ানোর জন্য। ফলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
মানবাধিকার কর্মীও গ্ৰাম্য ডাক্তার পাকুল্লার বিপুল কুমার সাহা বলেন,আন্তর্জাতিক আইনে নিরীহ প্রাণিকে হত্যার বিষয়টি মানবতা পরিপন্থী হওয়ার কারণে বর্তমানে কুকুর নিধন নিষিদ্ধ রয়েছে। এছাড়াও আইনের ধারা অনুযায়ী বেওয়ারিশ কুকুর সহ কোনো প্রাণিকে বিচার বহির্ভূত হত্যা করা যাবে না। ফলে দিন দিন বেড়েই চলছে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তার নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। তাই রাষ্ট্রকেই কুকুর নিয়ন্ত্রণে নতুন করে কিছু ভাবতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শারমিন কবিরাজ বলেন,জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা আমাদের সরবরাহ নেই।
তবে স্থানীয় সরকারের অধীনে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে চাহিদা অনুযায়ী টিকা বা ভাকসিন পেয়ে থাকি। এদিকে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হান্নান সরকার বলেন জলাতঙ্কের টিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সরবরাহের দায়িত্ব আমাদের নয়। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নুসরাত জাহান লাকী বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের কারণে কুকুর নিধন করা যাবে না। তবে কুকুরদের বন্ধ্যাত্বকরণের বিষয়ে ভাবছে কর্তৃপক্ষ।