এ কে আজাদ, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি-(খুলনা):
খুলনার কপিলমুনিতে শশুর ও শ্যালকের প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বাস্তহারা হবার উপক্রম একমাত্র জামাই গৌরাঙ্গ সাধু। সম্প্রতি তারা কৌশল খাটিয়ে গৌরাঙ্গের নিজ অংশের বসতবাড়িটুকু প্যারালাইস্ডে আক্রান্ত ও মানসিক বিপর্যস্ত বাবা রঞ্জন সাধুর কাছ থেকে লিখে নিয়েছে বলে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বাস্তহারা অসহায় গৌরাঙ্গ। এ বিষয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে জানাগেছে, পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি সদরস্থ নাছিরপুর মৌজায় গৌরাঙ্গদের বসত ভিটার জমি ১২ শতক। বাবা রঞ্জন সাধুর একক মালিকানাধীন বাস্তভিটায় বাবা রঞ্জন সাধুসহ দু’ভাই শংকর সাধু ও গৌরাঙ্গ সাধু বসবাস করে আসছে। ইতোমধ্যেই তার মাতা মৃত্যু বরণ করেন। দু’ভাইয়ের সংসারে একমাত্র পিতা রঞ্জন সাধু (৭০) সম্প্রতি প্যারালাইস্ডে আক্রান্ত হয়ে মানষিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।
তিনি অসুস্থ হওয়ার কারনে কথা বলতে ও চলাফেরা করতে পারেন না। এদিকে পিতামাতার চিকিৎসা ব্যায়ে ও সংসারে উন্নতি ফেরাতেই ছোটভাই গৌরাঙ্গ তার অংশ থেকে ৩শতক জমি বিক্রির জন্য প্রস্তাব দেয়। এতেকরে গৌরাঙ্গ’র স্ত্রী রুপা বিষয়টি তার পিতামাতা ও ভাই বিশ্বজিতকে জানালে বাঁধে বিপত্তি! কোটিপতি ভাইয়ের পরামর্শে এখানেই আটকে যায় স্ত্রী রুপা। দু’ভাই বোন ও পিতামাতা মিলে গৌরাঙ্গকে প্রস্তাব দেয় ৩ শতক জমি তার স্ত্রী রুপার নামে লিখে দিতে। যার মুল্য নির্ধারণ করে সমপরিমাণ টাকা শশুর অসীম সাধু জামাই গৌরাঙ্গকে প্রদান করবে এবং যা দিয়ে সে ব্যবসা বানিজ্য পরিচালনা করতে পারবে।
এমন সহজ কথায় রাজি করিয়ে স্ত্রী রুপা উৎফুল্ল ভাব দেখিয়ে বিষয়টি তার ভাসুর শংকরকে জানায়। কিন্তু তাদের এমন সহজ সরল মানষিকতার মুল্য বুঝতে পারিনি দু’ভাই। পরে বড়ভাই শংকরকে ম্যানেজ করে ফেলে তারা।
এরপর ঘটে যায় যত বিপত্তি! ছোটভাই গৌরাঙ্গকে না জানিয়ে স্ত্রী রুপা তার কোটিপতি বাবা অসীম সাধু, ভাই বিশ্বজিৎ সাধু, ভাসুর শংকর সাধু ও এক ভগ্নিপতি মিলে পরামর্শ করা হয়। কথামত একটি প্রাইভেট কার ভাড়া করে গত ১৫/০২/২৩ তারিখে প্যারালাইস্ড আক্রান্ত পিতা রঞ্জন সাধুকে সাবরেজিষ্ট্রী অফিসে নিয়ে যায় তারা। পূর্ব থেকে প্রস্তুত করা দলিলে পিতার ১২ শতক জমির প্রাপ্যদার দু’ভাইয়ের মধ্যে ৬ শতক ভাসুর শংকর সাধু ও বাকি ৬ শতক জমির ৩শতক স্ত্রী রুপার নামে রেজিষ্ট্রী না করে রুপার মাতা গীতারানী সাধুর নামে রেজিষ্ট্রী করেন তারা। যেখানে বড়ভাই শংকর সাধুর নামে ৬শতক ও স্ত্রী রুপার নামে ৩ শতক এবং বাকি ৩শতক গৌরাঙ্গ’র নামে রেজিষ্ট্রী হবে বলে শশুর শ্যালকদের সাথে আলোচনা হয়েছিল বলে জানায় গৌরাঙ্গ।
এ বিষয়ে গৌরাঙ্গ সাধু জানান যে, স্ত্রী রুপার নামে ৩ শতক জমি রেজিষ্ট্রীর কথায় আমি রাজি হই। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে বড়ভাই শংকরকে ম্যানেজ করেই শশুর শ্যালক মিলে আমার অংশের সবটুকু সম্পত্তি লিখে নিয়েছে ওরা। এখন আমি বাস্তহারা হয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। ৩ শতকের পরিবর্তে ৬ শতক অর্থাৎ আমার অংশের সবটুকু সম্পত্তি লিখে নিয়েছে শশুর, শ্যালক মিলে। যার প্রাপ্য টাকা একটি কানাকড়ি আমার পিতাকে দেয়নি তারা।
এদিকে স্ত্রী রুপাকেও আটকিয়ে রেখে বিভিন্ন কু-মতলব ও ভিন্ন কৌশলে আমাকে জব্দ করার পায়তারা করছে শ্যালক বিশ্বজিৎ। গৌরাঙ্গ বলেন, স্ত্রী রুপা, ১ মেয়ে তুলি ও ১ ছেলে তুর্য্যকে নিয়ে ভালো কাটছিলো তাদের দাম্পত্য জীবন। কিন্তু শ্যালক বিশ্বজিৎ স্ত্রী রুপাকে লোভে ফেলে বিভিন্ন পরিকল্পনা করে আমার সোনার সংসার তছনছ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে আইনী পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানান তিনি।